গোপালগঞ্জ: দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে গোপালগঞ্জে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়।
কালের কন্ঠের শুভ সংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সভা সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুজন দাস।
গোপালগঞ্জ সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শুভ সংঘের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা কৃষক লীগের দপ্তর সম্পাদক ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাহী সম্পাদক আকবর আলী মোল্লা, জেলা সম্মিলিত ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আহসান (হুসাইন), চন্দ্রিমা শিল্পি গোষ্ঠীর সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদ, জেলা রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের জেলা প্রতিনিধি আমিনুল হাসান শাহীন, কালের কণ্ঠের জেলা প্রতিনিধি প্রসূন মণ্ডল, বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কমের জেলা প্রতিনিধি সেখ মো. একরামুল কবীর, নিউজ২৪ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মুন্সী মো. হুসাইনসহ অনেকে বক্তব্য দেন।
এ সময় মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, গোপালগঞ্জ টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি মাহবুব হোসেন সারমাত, শেখ মোস্তফা জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাদল সাহা, প্রচার সম্পাদক সেলিম রেজা, সদস্য মাসুদ পারভেজ, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি নতুন শেখ, ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি সিহাব মোল্লাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও শুভ সংঘের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহ আলম বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপ এ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গ্রুপ। দেশে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হচ্ছে এ গ্রুপের মাধ্যমে। দেশকে পিছিয়ে দিতে একটি কুচক্রী মহল এ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার চেষ্টা করছে। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। আর এ ঘটনার ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের গ্রেফতার করা দাবি জানাচ্ছি।
জেলা কৃষক লীগের দপ্তর সম্পাদক ও জেলা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নির্বাহী সম্পাদক আকবর আলী মোল্লা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে এ দেশে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছে। একটা স্বাধীন দেশে এটা মোটেও কাম্য নয়। বসুন্ধরা গ্রুপের বিভিন্ন শিল্প কারখানা ও প্রতিষ্ঠানে ৭০ হাজার পরিবারের প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের রুটিরুজির ব্যবস্থা হচ্ছে। এ গ্রুপের এমডিকে হত্যার চেষ্টাকারীরা এদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চায়।
জেলা সম্মিলিত ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও জুয়েলার্স সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আহসান (হুসাইন) বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী। তাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গোপালগঞ্জ সম্মিলিত ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আর ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি, যাতে ভবিষ্যতে অন্য কেউ এমন ঘটনা ঘটাতে সাহস না করে।
গোপালগঞ্জ জেলা রিপোর্টার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এস এম নজরুল ইসলাম এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে অন্য জড়িতদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এটা কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নয়, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। দেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে একটি মহল এ ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, করোনাকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ায় বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে আট হাজার দরিদ্র পরিবারের মধ্যে খাদ্য ও সুরক্ষা সামগ্রী এবং দুই হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র লিমিটেডের চেয়ারম্যান সায়েম সোবহান আনভীরকে একাধিকবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। সর্বশেষ পরিকল্পনা অনুযায়ী জুমার নামাজের সময় আনভীরকে গুলি করে হত্যার ষড়যন্ত্র হয়।
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সাইফুল ইসলাম সাদ (২৩) নামে চট্টগ্রামের পটিয়ার এক যুবককে আটক করেছে রাজধানীর ভাটারা থানা পুলিশ। শুক্রবার (০৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সাউতুল কোরআন মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে তাকে আটক করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে সাইফুল ইসলাম সাদ জানিয়েছেন, হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে নাজমুল করিম ওরফে শারুন চৌধুরীর নির্দেশে তিনি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যার চেষ্টা করেছেন।
বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরকে হত্যাচেষ্টার নির্দেশদাতা হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ও তার ছেলে নাজমুল করিম ওরফে শারুন চৌধুরীকে দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০২১
এসআই