ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৪ আসামি আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৪ আসামি আটক

কুমিল্লা: এসএসসি পরীক্ষার্থী ইখতেখার হাসান ইমন (১৮) হত্যা মামলার এজাহারনামীয় প্রথম তিনজনসহ মোট চার আসামিকে আটক করেছে র‌্যাব-১১ সিপিসি-২।  

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‌্যাব-১১ সিপিসি-২ এর অধিনায়ক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।

হত্যাকাণ্ডের শিকার ইখতেখার হাসান ইমন (১৮) কুমিল্লার দাউদকান্দির পিপইয়াকান্দির আলাউদ্দিনের ছেলে।

জানা যায়, দাউদকান্দির মো. নাছির উদ্দিন প্রকাশ মুরগা নাছির (৪০) ও তার সহযোগীদের দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল ইমনের। বিরোধের কারণ আসামি মো. নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগীরা প্রায়ই ইমনকে সময় সুযোগ হলে দেখে নিবে বলে হুমকি দিতেন।  

গত ২০ ডিসেম্বর দাউদকান্দি মডেল থানার মোহাম্মদপুর (পশ্চিম) ইউনিয়নের মালাখালা গ্রামের নারিকেলতলা জামে মসজিদের সামনে নারিকেলতলা নূরানী মাদরাসার বাৎসরিক ওয়াজ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ইমন বাড়ি থেকে বের হয়ে ওয়াজ ও দোয়া মাহফিলে অংশ নেওয়ার উদ্দেশে রওনা হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার সময় তিনি নিজ এলাকা পিপইয়াকান্দি থেকে মালাখালা গ্রামের নারিকেলতলা জামে মসজিদের সামনে ওয়াজস্থলে এলে নাছির তাকে দেখতে পেয়ে বিষয়টি তার সকল সহযোগীদের একত্রিত করে এবং ইমনকে হত্যার পরিকল্পনা করে। নাছির উদ্দিন ও তার সহযোগীরা অতর্কিতভাবে ইমনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন নাছির উদ্দিনের হাতে থাকা ধারালো সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে পেছন থেকে ইমনকে পিঠের ডান পাশে আঘাত করেন। নাছিরের সহযোগী ইয়াছিন (২২) তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে ইমনের বাম হাতের নিচে আঘাত করেন। হৃদয় (২৩) ছেনি দিয়ে বাম হাতের ওপরে পোচ দেন এবং মাইনুদ্দিনসহ (১৮) আরও ১৫-২০ জন লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে ইমনকে মারধর করে মাটিতে ফেলে রেখে যায়। পরবর্তীকালে সিএনজি অটোরিকশায় স্থানীয় জনতা ইমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২০ ডিসেম্বর রাত ১০টার সময় ইমন মারা যান।  

পরবর্তীকালে ২২ ডিসেম্বর ইমনের চাচা জামাল (৪০) বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় ১২ জন এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে খুব অল্প সময়ের মধ্যে তা ভাইরাল হয় এবং এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পেরে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ ছায়া তদন্ত শুরু করে। মামলা লিপিবদ্ধ হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ২২ ডিসেম্বর ভোর রাত থেকে দিনব্যাপী দাউদকান্দি থানার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে মালাখালা গ্রামের মৃত আজগর আলীর ছেলে ও এক নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি মো. নাছির উদ্দিন ওরফে মুরগা নাছির (৪০), একই গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে ও দুই নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি ইয়াছিন (২২) ও বশিরের ছেলে ও তিন নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি হৃদয় (২৩) এবং একই থানার নারিকেলতলা গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে ও পাঁচ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি মাইনুদ্দিনকে (১৮) আটক করে।

মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, আসামিদের দাউদকান্দি থানার সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হস্তান্তর করা হয়েছে। এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামিদের আটকে র‌্যাব-১১, সিপিসি-২ এর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।