ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

‘আল্লাহ জানে ক্যামনে মুই বাইচ্চা আছি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
‘আল্লাহ জানে ক্যামনে মুই বাইচ্চা আছি’

বরিশাল: ‘আল্লাহ জানে ক্যামনে মুই বাইচ্চা (বেঁচে) আছি, হে না চাইলে আইজ কেউ মোরে বাঁচাইতে পারতে না। এহন আইছি লঞ্চটারে দ্যাখতে, হ্যার (তার) লগে মোর জ্যাকেট আর ব্যাগ খোঁজতে।

কিন্তু খুঁইজ্যা ব্যাগটা পাইলাম না, জ্যাকেটের পোড়া অংশ পাইছি, তয় হ্যা (সেটা) দিয়া আর কি হরমু, হ্যার লাইগ্যা এহন বাড়িই যাই। ’

বাংলানিউজকে এসব কথা বলছিলেন বরগুনার বেতাগী উপজেলার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ।  

তিনি জানান, সৌদি আরব যাবেন আর কয়েকদিন পরেই। তাই কোভিড ভ্যাকসিন নিতে গত বুধবার ঢাকায় গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ভ্যাকসিন দিয়ে দুপুরের দিকেই ঢাকার সদরঘাটে আসেন। এরপর অভিযান-১০ লঞ্চে চেপে বসেন বাড়িতে ফিরবেন বলে।

তিনি বলেন, ‘মোর ইঞ্জিন চালিত নৌকা আছে বাড়িতে। হ্যার লাইগ্যা ইঞ্জিনের কিছু বুঝি। লঞ্চ ছাড়ার সময় ইঞ্জিনের শব্দডা ক্যামন জানি লাগছিল। রাইতে যহন ছাদে উডি, তহন দেখি ধুয়ার (ধোঁয়া) লগে আগুনের ফুলকি বাইর হয়। অন্যগো লগে কইছিও ঠিকমতো বাড়ি যাইতে পারমু কিনা। ’

‘এরপর তো রাইত ১টার দিকে বরিশাল আর রাইত ৩টার দিকে ঝালকাঠি পৌঁছায় লঞ্চটা। রাইত ৩টা ১৩ মিনিটে ঘরি দেইখ্যাই ঘুমানের লইগ্যা হুইয়া (শুয়ে) পড়ি। কিন্তু এর কয়েক মিনিট পরই বিকট শব্দ হয়। এরপর দেহি নিচ দিয়া আগুন আর ধোঁয়া আইতাছে। লোকজন চিল্লাচিল্লি শুরু হরছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে আগুন যহন ছড়াইয়া পড়ে, তহন লঞ্চটা মাঝ-নদীতেই। কিছু বোঝতে আর পারি নাই, লোকজন যহন নদীতে লাফ দেওয়া শুরু হরলো, প্রাণ বাঁচাইতে, তহন মুইও লাফ দি। অ্যারপর ক্যামনে যে বাইচ্চা আছি, হ্যা আল্লাহ জানে। আল্লাহ না চাইলে বাঁচার উপায় ছিল না,’ যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘যারা লাফ দেয় নায় বা ট্যার পায় নায়, হ্যারাই পুইড়া মারা গেছে। লঞ্চে আইয়া তো কয়লা আর ছাই ছাড়া কিছুই দেহি না। ’ 

 

আরও পড়ুন: 

স্টাফ-মালিক পক্ষের কাউকেই পায়নি বিআইডব্লিউটিএ
সুগন্ধা নদীতে লাফ দিয়ে প্রাণে বাঁচেন ইউএনও
লঞ্চে আগুন: তদন্ত কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রণালয়
লঞ্চে আগুন: ঝালকাঠী যাচ্ছেন নৌ প্রতিমন্ত্রী
সুগন্ধা নদীতে ল‌ঞ্চে আগুন: ৩৬ জনের মৃত্যু
ঝালকাঠিতে বরগুনাগামী লঞ্চে আগুন  

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২১
এমএস/এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।