ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

লঞ্চে আগুন: নিখোঁজদের তথ্য মিলছে না বরগুনা নৌ-বন্দরে

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
লঞ্চে আগুন: নিখোঁজদের তথ্য মিলছে না বরগুনা নৌ-বন্দরে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ

বরগুনা: নিখোঁজদের খোঁজে বরগুনার নৌ-বন্দরে শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অপেক্ষা করেও কোনো খোঁজ খবর জানতে পারেননি অনেক স্বজন। খোঁজ না পেয়ে নৌ-বন্দরে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা।

বরগুনা সদরের ঢালুয়া ইউনিয়নের মোল্লা হোরা এলাকার শিমুল সরদার বাংলানিউজকে বলেন, বিকেল হয়ে গেলেও বন্দর কর্তৃপক্ষ কোনো তথ্য দিতে পারেনি। লঞ্চে থাকা আমার স্ত্রী তাসলিমা (৩৫), দুই মেয়ে সুমাইয়া আক্তার মিম (১৫) ও সুমনা আক্তার তানিশা (১২) এবং ছেলে জুনায়েদের (৭) এখনো কোনো খোঁজ পাইনি।

একই ইউনিয়নের খাজুরা গ্রামের রিপন বলেন, লঞ্চে আগুন দুর্ঘটনায় আমার ফুপাতো ভাই খাজুরা এলাকার মইন ও ফুপাতো ভাইয়ের ছেলে আবদুল্লাহ ও তার শ্যালিকা আছিয়া নিখোঁজ রয়েছেন। হাসপাতাল ও ঘটনাস্থলে খোঁজ নিলেও তাদের খোঁজ মেলেনি।  

স্বজনদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, বরগুনার মাইঠা এলাকার ইদ্রিস খান, নলী এলাকার আবদুল হাকিম, চাঁদপুরের মনোয়ারা, পাথরঘাটার টেংরার পপি আক্তার, পাথরঘাটা পৌরসভার তালতলা এলাকার আবদুর রাজ্জাক, পাথরঘাটার কালমেঘার কালিবাড়ী এলাকার রাকিব মিয়া, বরগুনা সদরের হাফেজ তুহিনের মেয়ে (নাম অজ্ঞাত) সদরের ছোট আমতলী এলাকার জয়নব বেগম, মির্জাগঞ্জ উপজেলার রিনা বেগম ও তার মেয়ে রিমা, বরগুনা সদরের পরীরখাল এলাকার মা মেয়ে রাজিয়া ও নুসরাত, বরগুনা ঢলুয়া এলাকার মোল্লারহোড়া গ্রামের একই পরিবারের মা তাসলিমা (৩৫) ও তার মেয়ে মিম (১৫) তানিশা (১২) ও ছেলে জুনায়দেসহ চারজন নিখোঁজ রয়েছেন।

রিপন আরও বলেন, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ইঞ্জিনরুম থেকে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ হয়। মুহূর্তে গোটা লঞ্চ ধোয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। সেসময় ডেকে ঘুমন্ত যাত্রীরা জেগে উঠে ছোটাছুটি শুরু করেন এবং হুলস্থুল অবস্থার সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ নদীতে ঝাঁপ দেন আবার অনেকে চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন। একপর্যায়ে উদ্ধারে কয়েকটি ট্রলার এগিয়ে আসে এবং যাত্রীদের অনেকে ট্রলারে উঠে তীরে নামেন।  

বরগুনা নৌ-বন্দরের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ বলেন, লঞ্চটিতে বিভিন্ন বয়সের ৩০০-৪০০ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের উদ্ধারে বরিশাল নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। আমি খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছি।

বরগুনা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত ৩৩টি মরদেহের মধ্যে শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে দুই জমজ বোনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি শনাক্তবিহীন ৩০ মরদেহের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১১টার দিকে বরগুনা সার্কিট হাউজ মাঠে এবং পোটকাখালি গণকবরে সম্পন্ন করা হবে দাফন।  যারা আহত এবং নিহত হয়েছেন জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।  

** নিহত ও আহতের পরিবারকে অর্থ সহায়তা দেবেন বরগুনা ডিসি

বাংলাদেশ সময়: ১০১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২১
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।