ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চ তীরে ভেড়ানোর ব্যবস্থা নেয়নি কেউ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০২১
আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চ তীরে ভেড়ানোর ব্যবস্থা নেয়নি কেউ লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান

বরিশাল: নদীটা খুব বেশি বড় না। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে জাহাজটি (এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ) কোন এক পাড়ে ভিড়িয়ে অ্যাংকর ফেললে মানুষ দ্রুত তীরে লাফিয়ে উঠতে পারতো।

কিন্তু লঞ্চের সারেং বা নিয়ন্ত্রণে জড়িত কেউ সেই উদ্যোগ নেয়নি।

রোববার (২৬ ডিসেম্বর) ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে থাকা এমভি অভিযান-১০ লঞ্চ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল জিল্লুর রহমান এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডে অনেক মানুষ মারা গেছে- এটা আমরা সবাই জানি। তবে আমরা যখন খবর পাই এবং এখানে আসি তখন লঞ্চটি তীরে ভেড়ানো অবস্থায় ছিল না। তীর থেকে ১০-১৫ ফিট দূরে মূল নদীতে জলন্ত অবস্থায় ছিল।

এতো বড় একটি জলযান যদি নদীর মাঝখানে ফেলে চলে যায় তাহলে তো এটি নিয়ন্ত্রনহীন অবস্থায় থাকবে। তখন হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায় এবং মানুষকে পানিতে লাফ দিতে হয়েছে।

তিনি বলেন, জাহাজটিতে মাঝ নদীতে বসে যদি আগুন লেগেও থাকে আর তারা (স্টাফরা) যদি অতি দ্রুত একটা পাড়ে এনে নোঙ্গর করতো তাহলে লোকজন নেমে যেতে পারতো। যারা মারা গেছেন, তারাও কিন্তু লাফ দিয়ে নেমে যেতে পারতো। কিন্তু যারা লঞ্চ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন  তারা তা করতে পারেনি, বা করেনি।

তিনি বলেন, তদন্ত শেষ করলে পরবর্তীতে আমরা এ বিষয়ে আরও জানাতে পারব। তবে আগুনের বড় সমস্যা হলো সব ধরনের আলামতকে নষ্ট করে দেয়। এখন পরিদর্শন করে যা তথ্য উপাত্ত পাচ্ছি তার সবই কিন্তু পোড়া অবস্থায়।

তিনি বলেন, ভবন বা জলযানের যার কথাই বলি, সূত্র হলো- যখন কোনো অগ্নিকাণ্ড ঘটবে তখন সেখানে ফায়ার সেফটির পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত থাকতে হবে। আগুন প্রাথমিক অবস্থায় থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সেটি বড় হতে না পারে। এটা ফায়ার ফাইটিং বা সেফটির ইউনিভার্সাল সিস্টেম। একজন ভবন মালিক ও ব্যবহারকারীকে যেমন তার ভবনে অগ্নিনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে, একটা জলযান ব্যবহারকারীকে বা ম্যানেজমেন্টেকে জলযানের অগ্নি নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। আর জলযান যেহেতু পানির ওপরে চলে তাই পানি পাওয়াটা তাদের জন্য খুব সহজলভ্য এবং তারা এই নদীর পানি ব্যবহার করে ফায়ার ফাইট করতে পারে। সুতারাং এ ধরনের যন্ত্রপাতি যখন তাদের কাছে থাকবে, ফায়ার ফাইট করা আরও সহজ হবে, আর এ যন্ত্রগুলো অনুপস্থিত বা অকার্যকর অবস্থায় রাখলে আগুনটাও ছড়িয়ে যেতে পারে।

সবশেষে তিনি বলেন, ব্যবহারকারীকে অগ্নি নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে হবে। সেই সঙ্গে ম্যানেজমেন্টকে নিশ্চিত করতে হবে অগ্নি নিরাপত্তা আছে এবং যন্ত্রপাতি সচল আছে। আর ফায়ার সার্ভিস তো সবসময় কাজ করবেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬,২০২১
এমএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।