ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আ.লীগ নেতার মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আ.লীগ নেতার মৃত্যু

পাবনা: পাবনা সদরের হেমায়েতপুর ইউনিয়নের নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শামীম হোসেন (৪০) নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে প্রতিপকক্ষের সমর্থকরা। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ইউনিয়নের নাজিরপুর হাটপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শামীম হোসেন নাজিরপুর হাটপাড়ার নুর আলী প্রামানিকের ছেলে।

ঘটনার পরে নিহত পরিবারের সদস্যরা স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান নিলু ও তার ভাইয়ের বাড়িতে হামলা করে। এসময় হামলা কারীরা নিলু চেয়ারম্যানের ভাই পাবনা সদর থানা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক এ কে এম মাহাবুবুল রহমানের বাড়িতে হামলা করে ব্যাপক ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ারসার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স এর সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যায় ওই গ্রামে একটি দোকানের পাশে বসে সদ্য পরাজিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মধু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শামীম হোসেন প্রামানিক বসে কথা বলছিল। এ সময় অপর স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান অটোরিকশা প্রতীকের প্রার্থী তরিকুল ইসলাম নিলুর লোকজনের সঙ্গে মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ সমর্থকরা নিলুকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি এসে অতর্কিতে গুলি চালায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে জরুরী বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আনোয়ারুল আজীম চিনু বলেন, সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনে নিলুর সমর্থকরা পরাজয় নিশ্চিত হয়ে জামায়াতের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়। তাদের সমর্থনে জামায়অতের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বিজয়ী হয়েছে। নির্বাচনী বিষয় নিয়ে আমরা যারা নৌকার নির্বাচন করেছি তারা সন্ধ্যায় মূল্যায়ণ বৈঠক করছিলাম। হঠাৎ নিলু ও তার ছেলে ইমরানের সঙ্গে শিবির কর্মীরা অতর্কিত আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় গুলি চালালে শামিম গুলিবিদ্ধ হয়। তাৎক্ষণিক আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করি।  

এ ঘটনার পরপরই হাসপাতালে ছুটে যান পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক প্রিন্স এমপি।  

এ সময় তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হলেও সরকার জিতেছে। বিজয়ের মাসে প্রকাশ্যে ত্যাগী আওয়ামী লীগ কর্মীকে এভাবে হত্যা কোনোভাবে মেনে নেয়া যায় না। আমি প্রশাসনকে অনুরোধ করব যারাই এ ঘটনায় যারা সম্পৃক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। নির্বাচনের পরদিন থেকেই শামীমকে এরা বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গে জামায়াতের যোগসাজশে এ হত্যা।  

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে যারাই এ ঘটনায় জড়িত তাদের খুঁজে বের করা হবে। আমাদের লোকজন এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান পরিচালনা করছেন।  

প্রসঙ্গত, গত রবিবার হেমায়েতপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচিত হন এবং নৌকার প্রার্থী মঞ্জুরুল আলম মধু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী তরিকুল ইসলাম নিলু পরাজিত হন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০২১
আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।