ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

আলোর ঝর্ণাধারায় আঁধার কাটছে প্রাচীন জনপদ রাজশাহীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
আলোর ঝর্ণাধারায় আঁধার কাটছে প্রাচীন জনপদ রাজশাহীর

রাজশাহী: বাংলার জনপদগুলোর মধ্যে প্ৰাচীনতম হলো পুণ্ড্র। পৌন্দ্রিক শব্দ থেকে ‘পু নামের উৎপত্তি।

এর অর্থ- আখ বা চিনি। বাংলাদেশের সর্বপ্রাচীন জনপদ হলো পুণ্ড্র। রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর ও দিনাজপুর অবস্থানভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল পুণ্ড্র জনপদ। রাজশাহীর সেই প্রাচীন জনপদই আজকের তিলোত্তমা নগরী।  

এরইমধ্যে বিশুদ্ধ বায়ুর শহর হিসেবে খ্যাতি পেয়েছে উত্তরের এই বিভাগীয় শহর। একই সঙ্গে রয়েছে পরিচ্ছন্ন নগরীর খেতাবও। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম ক্রমেই দৃশ্যমান হচ্ছে। বিশেষত রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে অনন্য এক শহরের রূপ পাচ্ছে ‘রাজশাহী’।

রাস্তাঘাট, হাট-বাজার, পদ্মার তীরসহ দৃশ্যমান বিভিন্ন উন্নয়নের পাশাপাশি একের পর আলোকিত হচ্ছে- নতুন নতুন জনপদ। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজশাহী মহানগরীর আলিফ লাম মীম ভাটার মোড় থেকে বিহাস পর্যন্ত নবনির্মিত ফোরলেন সড়কে ১ম পর্যায়ে আলিফ লাম মীম ভাটার মোড় থেকে নাদের হাজির মোড় পর্যন্ত সড়ক দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতিতে আলোকায়নের উদ্বোধন করা হয়েছে। অত্যাধুনিক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জ্বলবে ও নিভবে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলিফ লাম মীম ভাটার মোড়ে ফলক উন্মোচন ও সুইচ চেপে আলোকায়নের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

উদ্বোধনকালে রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশেগুলোর বিভিন্ন শহরে এমন চমৎকার সড়কবাতি থাকে। উন্নত দেশগুলোর মতো রাজশাহীতে প্রশস্ত সড়ক নির্মাণের পর বিদেশ থেকে আমদানি করা দৃষ্টিনন্দন পোল ও অত্যাধুনিক সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। সড়কে অধিক আলোর কারণে পথচারীদের নিরাপত্তা বাড়ছে, পাশাপাশি শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামীতেও নগরীর অন্যান্য সড়কে এমন দৃষ্টিনন্দন আধুনিক সড়কবাতি লাগানো হবে। এভাবেই রাজশাহীকে সৌন্দর্যমণ্ডিত ও উন্নত মহানগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি।

সড়ক আলোকায়নের উদ্বোধনকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা, সিটি করপোরেশনের পানি ও বিদ্যুৎ স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু, প্যানেল মেয়র-৩ তাহেরা খাতুন মিলি, নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) আহমেদ আল মঈন পরাগ, সহকারী প্রকৌশলী আসাদুজ্জামান সুইট, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আসাদুল ইসলাম সুমন, উপ-সহকারী প্রকৌশলী তানভীর হাসান সজিব, কামাল পারভেজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল শাখা সূত্রে জানা গেছে- আলিফ লাম মীম ভাটার মোড় থেকে ছোটবনগ্রাম, মেহেরচন্ডী, বুধপাড়া, মোহনপুর রেলক্রসিং হয়ে বিহাস পর্যন্ত রাজশাহী-নাটোর সড়ক পর্যন্ত পূর্ব-পশ্চিমমুখি ৬ দশমিক ৭৯৩ কিলোমিটার ৪ লেন সংযোগ সড়ক নির্মাণ করেছে রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

সড়কের দুই পাশে ফুটপাথ, ১টি ব্রিজ, ৮টি কালভার্ট, মিডিয়ান ও ট্রাফিক কাঠামো নির্মাণ এবং ৩২৭ দশমিক ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। এবার সড়কটি আলোকায়ন করা হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে আলিফ লাম মীম ভাটার মোড় থেকে নাদের হাজির মোড় পর্যন্ত ২ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়কের আইল্যান্ডে ৮৭টি দৃষ্টিনন্দন পোল বসানো হয়েছে। প্রতিটি পোলে ২টি করে মোট ৮৭টি পোলে ১৭৪টি অত্যাধুনিক এলইডি বাল্ব লাগানো হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগামীতে দ্বিতীয় পর্যায়ে নাদের হাজির মোড় হতে বিহাস পর্যন্ত ২৮৫টি দৃষ্টিনন্দন পোলে ৫৫৬টি আধুনিক সড়কবাতি বাসানো হবে।

এর আগে রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন সড়ক দৃষ্টিনন্দন সড়কবাতিতে আলোকায়ন করা হয়েছে। কাশিয়াডাঙ্গা মোড় থেকে বিলসিমলা রেল ক্রসিং পর্যন্ত চার দশমিক দুই কিলোমিটার সড়কটিতে ১৭৪টি দৃষ্টিনন্দন পোলে বাসানো হয়েছে ৩৪৮টি আধুনিক এলইডি বাল্ব। বাতিগুলো প্রজাপতির মতো ডানা মেলে আছে।

মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ উপশহর মোড় থেকে দড়িখরবোনা, কাদিরগঞ্জ, মহিলা কলেজ, মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি হয়ে সোনাদিঘি মোড় এবং মালোপাড়া মোড় হতে রানীবাজার মোড় পর্যন্ত সড়কে মোট ৯৬টি ডেকোরেটিভ পোলে ৯৬টি দৃষ্টিনন্দন এলইডি সড়কবাতি লাগানো হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন এ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী বাতিগুলো অটোলজিক কন্ট্রোলারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন-অফ হয়। সড়কবাতিগুলো আলোর পাশাপাশি নগরীর সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০২১
এসএস/এমআরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।