ঢাকা: উদ্যোক্তা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুব ঋণের সুদহার কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রশিক্ষিত যুবকদের মাঝে ঋণ বিতরণে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও এনআরবিসি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা আছেন। তার কাছে আমার আহ্বান যুবকদের ঋণের সুদ আরও কমানোর। এতে যুবকরা আরও বেশি উপকৃত হবেন। যে উদ্দেশ্যে ঋণটা নেবে সেটা সফল হবে।
জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৩ লাখ যুবককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও সকলের জন্য ঋণ সুবিধা নিশ্চিত করা যায়নি। আমরা অসহায়। অনেক চাহিদা থাকার পরও ঋণ দিতে পারছি না। ১৬৬ কোটি টাকার তহবিল ৪৩৫ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। তারপরও সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ যুবককে ঋণ দিতে পারি।
এমন পরিস্থিতিতে এনআরবিসি ব্যাংক যুবকদের ঋণ বিতরণে এগিয়ে এসেছে। তারা ৫০ হাজার যুবক-যুবতীকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করবে। আলোচনা সাপেক্ষে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে। এতে অনেক যুবকের মুখে হাসি ফুটবে। এনআরবিসি ব্যাংকের মতো অন্য ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসা উচিত বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষিত যুবকদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে উঠতে পুঁজির যোগান দিতে ঋণ সহায়তা দেবে এনআরবিসি ব্যাংক। এ লক্ষ্যে উভয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে।
নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো: আজহারুল ইসলাম খান ও এনআরবিসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী গোলাম আউলিয়া।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এস এম পারভেজ তমাল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন।
এস এম পারভেজ তমাল বলেন, সরকারের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে এনআরবিসি ব্যাংক সূচনালগ্ন থেকেই উদ্যমী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। পর্যায়ক্রমে এ ব্যাংকের শাখা সকল জেলা ও উপজেলায় বিস্তৃতি লাভ করছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে নতুন নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে অর্থায়ন করছি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত যুবকদের ঋণ সহায়তা করে তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে এনআরবিসি ব্যাংক।
সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক (গ্রেড -১) মো. আজহারুল ইসলাম খান বলেন, যুববান্ধব এ সমঝোতা স্মারকটির মাধ্যমে কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ঋণ প্রাপ্তিতে সহায়ক হবে। এটি তাদের প্রকল্প ও খামার সম্প্রসারণে তাদের উদ্যমী করে তুলবে। যুব কর্মচাঞ্চল্যের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহুরে এলাকার যুবদের মাঝে কর্মবলয়ের সৃষ্টি হবে।
স্বাগত বক্তব্যে অধিদপ্তরের পরিচালক এ কে এম মফিজুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রধান চালিকাশক্তি যুবসমাজ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে তাদের প্রয়োজন মাফিক বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিলেও প্রয়োজনীয় ঋণ সহায়তা সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভবপর হয় না। কেউ কেউ ১০/১২ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে বাধ্য হন।
তিনি আরও বলেন, এ চুক্তির মাধ্যমে অধিক সংখ্যক যুবককে কর্মসংস্থান ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আত্মকর্মী ও উদ্যোক্তা ঋণ হিসেবে ৪ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ হার সুদে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দেওয়া যাবে। উদ্যোক্তা হতে নারী, তৃতীয় লিঙ্গ এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
এসই/এমজেএফ