ঢাকা: করোনা মহামারির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে সরকার ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করলেও বাজার-মার্কেট-গণপরিবহন-ফুটপাতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। রাজধানীর বেশিরভাগ শপিংমল বা মার্কেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পথচারী ও গণপরিবহনের বেশিরভাগ যাত্রী মাস্ক পরছেন না। যারা পরছেন, তারাও ঝুলিয়ে রেখেছেন থুতনিতে, গলায়। কোনো গণপরিবহনেই নেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা। গণপরিবহনের চালক ও হেলপাররাও নানা অজুহাতে মাস্ক পরছেন না।
প্রজাপতি পরিবহনের হেলপার মো. তানজিল বলেন, মাস্ক সবসময় পরি। একটু আগে মাস্কটা ছিঁড়ে গেছে। তাই এখন আর পরছি না।
রব-রব পরিবহনের হেলপার আকাশ বলেন, অনেকক্ষণ মাস্ক পরেছিলাম। এখন মাস্ক মুখ থেকে নামিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রেখেছি। মালিক যদি আমাদের হ্যান্ড স্যানিটাইজার না দেয় কী করবো?
বেশিরভাগ শপিং কমপ্লেক্সে দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলাচল করতে দেখা যায়। এখনও ব্যবস্থা করা হয়নি হ্যান্ড স্যানিটাইজারের। শপিং সেন্টারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, প্রবেশ পথে ব্যবহার করা হচ্ছে না হ্যান্ড স্যানিটাইজার। নেই কোনো জীবাণুনাশক বুথ। অধিকাংশ ক্রেতার মুখেই মাস্ক নেই। একইসঙ্গে বেশিরভাগ দোকান ও শোরুমের বিক্রেতারাও মাস্ক পরছেন না।
রাজধানীর মিরপুর শপিং সেন্টারে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা থাকলেও নেই জীবাণুনাশক বুথ। মিরপুর নিউমার্কেটে ব্যবস্থা করা হয়নি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবানুনাশক বুথের।
মিরপুর নিউমার্কেটের নিরাপত্তা প্রহরী মো. জাভেদ বাংলানিউজকে বলেন, গতবারের বিধিনিষেধের সময় আমাদের এখানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও জীবানুনাশক বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পরও আমাদের এখানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
রাজধানী মিরপুর ১ নম্বর
স্বাধীন বাংলা সুপার মার্কেট ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য হ্যান্ড স্যানিটাইজারের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ বিষয়ে ওই মার্কেটের নিরাপত্তা প্রহরী নাসির বলেন, ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য মার্কেট কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করেননি। আগে যখন বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছিল তখন হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এই বিষয়ে মার্কেট কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। আমি কিছু জানি না।
মিরপুর ৬ নম্বর এলাকার বাসিন্দা আদিব আহমেদ পারভেজ কাজ করেন একটি ডেভলপার কোম্পানিতে। তিনি বলেন, ১০ দিন আগে গিয়েছিলাম গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠিতে। গ্রামের বাড়িতে দেখলাম কেউ মাস্ক পরছে না।
পথচারী মো. শাহীন। কাজ করেন একটি পোশাক কারখানায়। মুখে মাস্ক নেই। তিনি জানান, কারখানা থেকে চা খাওয়ার জন্য বের হয়েছেন বলে মাস্ক পরেননি। মাস্ক তার পকেটে আছে।
করোনা মহামারির নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন প্রতিরোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার, যা আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
জানানো হয়, ট্রেন, বাস ও লঞ্চে সক্ষমতার অর্ধেক সংখ্যক যাত্রী নেওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকারিতার তারিখসহ সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা জারি করবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১১, ২০২২
এমএমআই