ঢাকা, রবিবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

নৌকায় ভোট দিয়েই রংপুর মঙ্গামুক্ত: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
নৌকায় ভোট দিয়েই রংপুর মঙ্গামুক্ত: প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ঢাকা: আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রংপুরে আর মঙ্গা দেখা দেয়নি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই কিন্তু রংপুরবাসী সব সুযোগ সুবিধাগুলো পেয়েছেন সেটা ভুললে চলবে না। ’

রোববার (১৬ জানুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে নবনির্মিত ‘রংপুর বিভাগীয় সদর দপ্তর কমপ্লেক্স ভবন’-এর উদ্বোধনকালে (ভার্চু্যয়াল) এ কথা বলেন তিনি।

টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রংপুর বিভাগের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। আর আল্লাহর রহমতে আমরা সরকারে আসার পর এই অঞ্চলে আর মঙ্গা দেখা দেয়নি, দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়নি। মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। মানুষের খাদ্যে, এখন উদ্বৃত্ত খাদ্যের অঞ্চল হয়ে গেছে রংপুর। যেখানে এক সময় খাবারের অভাবে মানুষ মারা যেতো। আমরা চাই আমাদের দেশটা আরও উন্নত হবে, এগিয়ে যাবে। ’

‘নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই কিন্তু রংপুরবাসী সব সুযোগ সুবিধাগুলো পেয়েছেন সেটা ভুললে চলবে না। ’

রংপুরের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর যত উন্নতি হয়েছে এর আগে অনেকেই তো, বিশেষ করে রংপুরের লোকেই তো ক্ষমতায় ছিল কিন্তু রংপুরের মানুষের তেমন কোনো ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। তারা নিজেদের ভাগ্য গড়েছে, সাধারণ মানুষের ভাগ্য গড়েনি। ’

রংপুর অঞ্চলের মানুষের শিক্ষার উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন. ‘ এই অঞ্চলে শিক্ষার হার কম ছিল, কিন্তু এখানে মেধাবী ছাত্র ছিল, কাজেই আমরা সেদিকে হিসেব করে আমরা এখন পদক্ষেপ নিয়েছি, কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, লালমনিরহাটে অ্যাভিয়েশন এবং এরো-স্পেস ইউনিভার্সিটি করে দিচ্ছি, আমরা রংপুরে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্ধ সেখানে তার নামে একটা কমপ্লেক্স এবং ট্রেনিং সেন্টার করা হয়েছে, রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বেগম রোকেয়ার নামেই আমরা করে দিয়েছি, তিনিই প্রথম শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই আমরা কিছু লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছি। এ অঞ্চলের প্রত্যেকটা জেলায় কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। ’

সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপে বাংলাদেশের ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের গৃহিত পদক্ষেপের ফলে অন্তত বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আজকে আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। মানুষ অনেক সচ্ছল হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। আমরা চাই, আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। ’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা এদেশকে নিয়ে, এদেশের মানুষকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়বেন। আমাদের লক্ষ্যও আমরা সেটাই গড়তে চাই। এদেশের আর কখনো যেন মঙ্গা দেখা না দেয়, আর কখনো দুর্ভিক্ষ যেন না হয়, এদেশের মানুষ যেন আর কষ্ট না পায়। ’

‘প্রত্যেকটা গ্রামকে আধুনিক সুবিধা সম্পন্ন করে দেবো। গ্রামের মানুষ, গ্রামে বসবাস করবে, কিন্তু নাগরিক সব সুবিধা পাবে। ’

আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন সমৃদ্ধ জাতি গঠন করার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন  জাতি গঠন করে বাংলাদেশকে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ করতে চাই। সেটা আমাদের লক্ষ্য। ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে আমরা যে ঘোষণাগুলো দিয়েছিলাম আল্লাহর রহমতে একে একে সবগুলো আমরা বাস্তবায়ন করেছি। আজকে বাংলাদেশ হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশ। এই উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। সেই পরিকল্পনা আমি করে দিয়েছি। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হবে। এজন্য আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। এটাও বাস্তবায়ন হবে ইনশাল্লাহ। বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা আর কেউ ভবিষ্যতে থামাতে পারবে না। ’

‘আমাদের প্রত্যেকটা মানুষ উন্নত হোক, আমাদের প্রতিটি ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখুক। ভবিষ্যৎ বংশধররা সুন্দরভাবে বাঁচবে, উন্নত জীবন পাবে। ’

উত্তরাঞ্চলের শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবার শীত পড়েছে, সবাই শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। আমরা সাধ্যমত সহযোগিতা করেছি, যারা বিত্তশালী আছেন তাদেরকে অনুরোধ করবো আপনারা শীত বস্ত্র বিতরণ করতে পারেন। ’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল ওয়াহাব ভূঞা।


বাংলাদেশ সময়: ১২৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
এমইউএম/এসআইএস 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।