শেরপুর: শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার আহম্মদনগর বধ্যভূমির সংরক্ষণ কাজ করতে গিয়ে মাথার খুলি ও হাড়গোড় উদ্ধার হয়েছে।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের কাজ করতে গিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় চারটি মাথার খুলি ও কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
সম্প্রতি গণপূর্ত অধিদফতরের আওতায় বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হয়। রোববার রাজমিস্ত্রি লিটন মিয়া, রমজান আলী ও শাহ আলীসহ কয়েকজন শ্রমিক বধ্যভূমির বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য মাটি খনন কাজ শুরু করলে মাটির নিচ থেকে চারটি মাথার খুলি ও বেশকিছু হাড়গোড় বের হয়ে আসে। বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে এলাকায় হুলস্থুল সৃষ্টি হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় সচেতন মহলের দাবির মুখে গণপূর্ত বিভাগ উদ্ধার হওয়া মাথার খুলি ও কঙ্কালগুলো সংরক্ষণের জন্য রেখেছে।
এ বিষয়ে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরু বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে শেরপুর অঞ্চলে পাকহানাদার বাহিনীর অন্যতম টর্চারসেল ছিল আহম্মদনগরে। স্থানীয় রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সহায়তাকারীদের বিভিন্ন এলাকা থেকে ধরে নিয়ে সেখানে নির্যাতনে হত্যা করে মরদেহ গণকবরে পুঁতে রাখা হতো।
তার ধারণা, স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছর পর সেখানকার বধ্যভূমি সংরক্ষণ করতে গিয়ে যে কঙ্কালগুলো বেরিয়ে এসেছে সেগুলো ওই সময়কালে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারানো মানুষেরই।
তিনি আরও বলেন, কঙ্কালগুলো গজনী অবকাশে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর কিংবা বধ্যভূমিতে প্রস্তাবিত গৃহে সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানানো হয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফারুক আল মাসুদ বাংলানিউজকে জানান, গণকবর সংরক্ষণ কাজের সময় মুক্তিযুদ্ধকালে কবর দেওয়া কয়েকজনের কঙ্কাল বের হয়ে আসে বলে ধারণা করছি। কঙ্কালগুলো আপাতত গণপূর্ত বিভাগের তত্ত্বাবধানেই রাখা হয়েছে।
বিষয়টি জেলা প্রশাসক (ডিসি) স্যারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সংশ্লিষ্ট বিভাগকে অবহিত করা হয়েছে এবং স্থানীয় দাবির বিষয়েও জানানো হয়েছে। সে অনুযায়ী কোনো নির্দেশনা পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০২২
এনটি