ঢাকা, বুধবার, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আজ থেকে পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস মাছ আহরণ নিষিদ্ধ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৪ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২২
আজ থেকে পদ্মা-মেঘনায় ২ মাস মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ...

চাঁদপুর: জাতীয় সম্পদ ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে জাটকা রক্ষায় মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা মেঘনায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ করেছে সরকার। নিষিদ্ধ সময়ে চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে।

অভিযান বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স সভার মাধ্যমে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। নদী উপকূলীয় এলাকা ও জেলে পাড়াগুলোতে প্রচার প্রচারণা অব্যাহত রেখেছে মৎস্য বিভাগ। জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকা জেলার ৪৪ হাজার ৩৫ জন জেলেকে ৪ মাস ৪০ কেজি করে বিজিএফ চাল খাদ্য সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ১ মার্চ প্রথম প্রহর থেকে ৩০ এপ্রিল মধ্য রাত পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ও মওজুদ নিষিদ্ধ থাকবে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে মৎস্য আইনে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

জেলা টাস্কফোর্স ছাড়াও মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, সদর ও হাইমচর উপজেলা টাস্কফোর্স ২৪ ঘণ্টা নদীতে অভিযান করবে। একইসঙ্গে নৌ পুলিশ ফাঁড়িগুলোও পুলিশ সদস্যরাও অভিযান চালাবে তাদের এলাকায়। টাস্কফোর্সের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদী উপকূলীয় এলাকার জেলে নৌকাগুলো ডাঙায় উঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মৎস্য বিভাগের এসব কাজে সার্বিক সহযোগিতার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

হাইমচর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জাটকা বিচরণের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হচ্ছে চরভৈরবী এলাকা। এখানে অসাধু জেলেরা জাটকা ধরার জন্য আসে। উপজেলা টাস্কফোর্স ইতোমধ্যে মৎস্য আড়ৎ ও জেলে পাড়াগুলোতে সচেতনতামূলক সভা এবং ব্যানার সাঁটানো হয়েছে। জাটকা ধরা থেকে বিরত থাকার জন্য মাইকিং করে প্রচারণা করেছে। জাটকা রক্ষায় দুই মাস নদীতে নিয়মিত যৌথ অভিযান চালানো হবে। কোনভাবেই জেলেদেরকে নদীতে নামতে দেওয়া হবে না।

মতলব উত্তর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোয়ারা বেগম বাংলানিউজকে বলেন, মেঘনায় মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে মৎস্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন ও কোস্টগার্ড অভিযান চালাবে। জেলেরা যাতে মেঘনায় মাছ ধরতে না পারেন, সে জন্য সার্বক্ষণিক তদারকির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উপজেলার মেঘনা তীরবর্তী ষাটনল, এখলাশপুর, মোহনপুর, ছটাকী, শিকিরচর, আমিরাবাদসহ আরও কয়েকটি এলাকায় গত কয়েক দিনে জেলে ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিক সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বাংলানিউজকে বলেন, জাটকা রক্ষায় জেলা টাস্কফোর্স খুবই কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ইতোমধ্যে মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় নৌবাহিনী এসে টহল শুরু করেছে। জেলা সদর ও উপজেলাগুলোতে ২৪ ঘণ্টা টাস্কফোর্সের অভিযান চলবে। এতে নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড, জেলা পুলিশ, নৌ পুলিশ সংযুক্ত থাকবে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চলবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মেঘনা উপকূলীয় এলাকার আড়ৎগুলোতে মাছ ক্রয়-বিক্রয় বন্ধ থাকবে। দেশীয় মাছের জন্য একটি নির্দিষ্ট বরফ কল ছাড়া বাকিগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব কাজে জেলে নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সার্বিক সহযোগিতার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস পদ্মা-মেঘনায় বালু উত্তোলনকারী ড্রেজার মেশিন বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ।

বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২২
কেএআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।