খুলনা: দীর্ঘ ১০ বছর পর খুলনার চাঞ্চল্যকর জাকির মুহুরি হত্যা মামলার আসামি বাহাউদ্দিন খন্দকারকে গ্রেফতার করেছে খুলনা জেলা পিবিআই।
মঙ্গলবার (০৮ মার্চ) দুপুরে পিবিআই খুলনার মুখপাত্র পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাহাউদ্দিনকে মহানগরীর বয়রা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ওই এলাকার আব্দুস ছাত্তার খন্দকারের ছেলে এবং নিহত জাকির মুহুরির সহকারী ছিলেন। এছাড়াও ভিকটিমের তৃতীয় স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল। বিষয়টি জানার পর দুজনের সম্পর্কের অবনতি হয়। একপর্যায়ে বাহাউদ্দিন জাকির মুহুরিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ২০১২ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় কয়েকজন ভাড়াটে দুর্বৃত্ত অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জাকির মুহুরির চেম্বারের সামনে যায়। অফিস বন্ধ করে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতির নেওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। এ সময় বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় মার্কেটের অন্যান্য সদস্যরা জাকির মুহুরিকে খুলনা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে অবস্থা আরো খারাপ হলে যশোর সিএমএইচে পাঠানোর পথে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে খুলনা সদর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ঘটনার দুইদিন আগে বাহাউদ্দিন নেপালে চলে যান। পাঁচদিন পর তিনি দেশে ফেরেন। ফিরে উচ্চ আদালত থেকে গ্রেফতারসহ হয়রানি না করার জন্য রিট পিটিশন মামলা করেন, যার নং ৭০৫৯/১২। মামলা দায়ের করে সময় বাড়িয়ে আসছিলেন তিনি। উক্ত রিট পিটিশন ২০২১ সালে নিস্পত্তি করা হয়। নিস্পত্তি আদেশ পাওয়ায় সোমবার রাতে বয়রা থেকে গ্রেফতার হন তিনি।
মামলাটি পিবিআইয়ের আগে খুলনা সদর থানা পুলিশ, ডিবি এবং সিআইডি গ্রহণ করেছিল। সাত বছর তদন্ত করে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করা হয়। পরে বাদীর নারাজি পিটিশনে মামলাটি তদন্তের জন্য আদালত পিবিআইকে নির্দেশ দেয়।
এদিকে বাহাউদ্দিন গ্রেফতার হওয়ার পর পুলিশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে পিবিআই। তাদের দাবি, হত্যাকাণ্ডে জড়িত এক ব্যক্তির নাম জানতে পেরেছেন তারা। বাহাউদ্দিনকে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে হাজির করা হবে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে মামলাটি গ্রহণ করেন পিবিআইয়ের এসআই পলাশ চন্দ্র রায়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৮, ২০২২
এমআরএম/এনএসআর