ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

দেশে জঙ্গিবাদ শতভাগ নির্মূল হয়নি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২২
দেশে জঙ্গিবাদ শতভাগ নির্মূল হয়নি: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ৭৫-এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুর পর বাংলাদেশকে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। দেশকে সাম্প্রদায়িক করার পাঁয়তারা চালায়।

তবে ধীরে ধীরে আমরা সেই জায়গা থেকে ইউটার্ন নিয়ে আবার আর জায়গায় আসতে পেরেছি। এখন বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক দেশ।

শনিবার (১২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সেমিনার হলে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রকাশনা ও আলোচনা  অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বুকে লালন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে যাচ্ছেন। দেশও দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা সেই স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছাতে চাই। তবে আমি বলব না যে আমরা এখনই সেই জায়গাতে পৌঁছে গেছি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা একের পর এক দৃশ্য দেখেছি। ইতালির নাগরিক ট্রাভেল সিজার, জাপানি নাগরিক হোসি কোনিও হত্যাকাণ্ড দেখেছি। খ্রীষ্টান ধর্মযাজককে হত্যা প্রচেষ্টা দেখেছি, মসজিদের মধ্যে বোমা হামলা দেখেছি। এই যে জঙ্গির উত্থান হয়েছিল, কারা করেছে, আমরা কিন্তু তা জাতির সামনে তুলে ধরেছি। র‌্যাব-পুলিশসহ আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর সব ইউনিট তাদের সবার নিজ অবস্থান থেকে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পদক্ষেপ নিয়েছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এদেশের মানুষকে ঘুরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। দেশের ছাত্র-শিক্ষক, যুব সমাজ, ইমাম, পুরোহিত বুদ্ধিজীবীসহ সবাই প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা দেশে জঙ্গিবাদের মোকাবিলা করেছি। এই আহ্বানে মা তার জঙ্গি ছেলেকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। রাজধানী ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এ রকম ঘটনা ঘটেছে। জনগণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই আজ আমরা জঙ্গিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছি। তবে জঙ্গিবাদের মূল শতভাগ উৎপাটন করা যায়নি। সেখানে আমাদের প্রচেষ্টা রয়েছে।

তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম ধর্মে মানুষ হত্যা করতে বলেনি। তাছাড়া কোনো ধর্মেই সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের স্থান নেই। জঙ্গিবাদে আমরা যেখানে যার সম্পৃক্ততা পেয়েছি, তাকেই আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। কারণ আমাদের দেশের মানুষ কখনই জঙ্গিদের পছন্দ করে না।

বিচার বিভাগ আজ স্বাধীন উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক জঙ্গী গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি। আবার অনেকেই আদালত থেকে জামিনে বের হয়েছে।
তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘুরে দাঁড়য়েছে। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়তে সবাই একসঙ্গে কাজ করছে।

মুক্তিযুদ্ধের সময় হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ বলে কোনো ভেদাভেদ ছিল না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবার রক্তে রঞ্জিত এই বাংলাদেশ। সবাই মিলেই দেশকে স্বাধীন করেছি। এখানে ধর্মীয় কোনো ভেদাভেদ নেই। যুদ্ধের সময়ও কোনো ভেদাভেদ ছিল না, এখনও নেই। কাজে কেউ এসে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে বিলুপ্ত করে দেবে, সেই সুযোগ নেই।

প্রকাশনা অনুষ্ঠানের শুরুতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের অডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়।

কমিটির সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি ও সংসদ সদস্য রাশেদ খান মেনন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক সমাজকর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া কবীর, রিজিওনাল এন্টি টেরোরিস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) এ কে মোহাম্মদ আলী শিকদার, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীয় সদস্য সমাজকর্মী কাজল দেবনাথ, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ১২ মার্চ, ২০২২
এসজেএ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।