ঢাকা: গত ১৩ অর্থবছরে ভোক্তা-অধিকারের ৪৯ হাজার ৯৬৮টি অভিযানে ১ লাখ ২০ হাজার ১০২ প্রতিষ্ঠানকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, অভিযানের মাধ্যমে আদায়কৃত জরিমানার পরিমাণ ৮২ কোটি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা।
সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বিশ্বভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ তথ্য জানান।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ভোক্তা অধিকার সুরক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে ভোক্তা- অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ প্রণীত হয়েছে। এ আইনের উদ্দেশ্য হলো মূলত ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ভোক্ত অধিকার বিরোধী কার্য প্রতরোধ, ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘন জনিত বিরোধ নিষ্পত্তি, নিরাপদ পণ্য ও সঠিক সেবা নিশ্চিতকরণ, ক্ষতিগ্রস্ত ভোক্তাকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা, পণ্য ও সেবা ক্রয়ে প্রতারণা রোধ এবং গণসচেতনতা সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, সরকারের কঠোর ব্যবস্থাপনার ফলে ভোক্তা সাধারণকে মানসম্মত পণ্য ও নিরাপদ খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের তৎপরতার ফলে ভোক্তাদের দুর্ভোগ অনেকাংশে কমে এসেছে। পূর্বের যে কোনো সময়ের তুলনায় এ অধিদপ্তরে জনসাধারণের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, মোট বাজার অভিযানের মাধ্যমে আদায়কৃত জরিমানার পরিমাণ ৮২ কোটি ৪৫ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এই সময়ের মধ্যে ভোক্তাদের কাছ থেকে মোট লিখিত অভিযোগ এসেছে ৫৬ হাজার ১২৪টি, এরমধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তির সংখ্যা ৫১ হাজার ৭৫৯টি। এছাড়াও নিষ্পত্তির মাধ্যমে দণ্ডিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭ হাজার ২৮১টি, এসব প্রতিষ্ঠান থেকে আদায়কৃত জরিমানার পরিমাণ ৫ কোটি ৯ লাখ ৪৩ হাজার ২০৮ টাকা।
তিনি বলেন, ভোক্তা-অধিকারের বাজার অভিযান ও লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে মোট জরিমানার পরিমাণ ৮৭ কোটি ৫৫ লাখ ১০ হাজার ২৫০ টাকা। ২৫ শতাংশ হিসেবে ৭ হাজার ১৮৫ জন অভিযোগকারীকে দেওয়া টাকার পরিমাণ ১ কোটি ২৫ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৭ টাকা।
মন্ত্রী বলেন, প্রতি বছরের মতো এ বছরও ১৫ মার্চ পালিত হচ্ছে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২২। এবারের বিশ্ব ভোক্তা-অধিকার দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় ন্যায্যতা’। প্রান্তিক পর্যায়ের ভোক্তারা যাতে সহজে অভিযোগ করতে পারে সেজন্য চালু করা হয়েছে ‘ভোক্তা বাতায়ন’ শীর্ষক হটলাইন সার্ভিস, যার নম্বর ১৬১২১। এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের ভোক্তারাও অভিযোগ দায়েরের সুযোগ পাবেন।
জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তা-অধিকারের সেবা খাতেও প্রচুর কাজ করার আছে। এই খাতে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে। আমরা পণ্যের বাইরে সেবা খাত নিয়েও কাজ করব। আমাদের যে হটলাইন রয়েছে, সেখানে প্রতিদিন ১০০ জনের বেশি ভোক্তা অভিযোগ করছেন। এছাড়া আমাদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সম্পর্কে ভোক্তারা যদি জানেন তাহলে বাস্তবায়ন করতে সহজ হবে। একই সঙ্গে ভোক্তারা সেবা খাতে অনেক বেশি প্রতারিত হচ্ছেন। এজন্য ভোক্তাদের তাদের অধিকার সম্পর্কে আরও সচেতন হতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ