নড়াইল: নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের কমিটি গঠন নিয়ে ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীণ কোন্দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। বুধবার (২৩ মার্চ) রাতে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ১০০ গজের মধ্যে তিনটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ঘটনার শুরু নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের নবীন বরণের প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে। এর জের ধরে ৮ মার্চ সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুজ্জামান পলাশ ও সহ সম্পাদক অলিপ হাসানকে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে থেকে ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপ তাদের লোহার রড দিয়ে মারধর করে।
এরপর মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের একটি কমিটির ঘোষণা আসে। এটা কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ ওই রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে পুরাতন টার্মিনাল গোলচত্ত্বর এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করে। এসময় তারা নড়াইল-যশোর সড়ক অবরোধ করেন ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুজ্জমান পলাশের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন বলে জানা গেছে।
বুধবার (২৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের ১০০ গজের মধ্যে তিনটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা এ সব ঘটনার প্রতিফলন বলে ছাত্র নেতাদের ধারণা।
সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ সিংহ পল্টু বাংলানিউজকে বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২২ মার্চ নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের একটি কমিটি ঘোষণা শুনি। এরপর কলেজের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের একাধিক পদ প্রত্যাশী নেতাকর্মী এ কমিটির বিরুদ্ধে মিছিল ও টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদ হয়।
স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রনেতা জানান, ভিক্টোরিয়া কলেজ কমিটির মেয়াদ আরও প্রায় ২ বছর আগে শেষ হয়ে গেছে, সেজন্য এখন অনেকেই এই গুরুত্বপূর্ণ পদে যাওয়ার জন্য গ্রুপিং করছে। সেজন্য মূলত উভয় পক্ষ মাঠ দখলের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুজ্জমান পলাশ বাংলানিউজকে জানান, কয়েক ছাত্রলীগ কর্মী কৌশলে আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে সজিব বিশ্বাসকে সভাপতি ও ইয়ামিন মোল্যাকে সাধারণ সম্পাদক দেখিয়ে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের একটি কমিটির পোস্ট হয়। পরে আমি সে পোস্টটি ডিলিট করে দেই এবং বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে জানাই। এরপর আমার বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের একটি পক্ষ যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তা খুবই দুঃখজনক।
তিনি আরো বলেন, বুধবার জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের পাশে বোমা বিস্ফোরণ হওয়ার পর ডিবি ও থানা পুলিশ আমাকে ফোন করেছিল। আমি বলেছি, আমি কোনো সন্ত্রাসী ও দখল দারিত্বের রাজনীতি করি না। আপনারা সিসিটিভি দেখে তদন্ত করে দেখেন। কেউ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে কী না।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শওকত কবীর বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ২-৩টি বোমার বিস্ফোরণ শুনেছি। তবে সিসিটিভিতে একটি খালি বাসে বিস্ফোরণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আমরা জোর তদন্ত করছি। আশা করছি দুর্বৃত্তদের ধরতে পারবো।
উল্লেখ্য, সংগঠন পরিপন্থী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার অভিযোগে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চঞ্চল শাহরিয়ার মীম ও সাধারণ সম্পাদক মো. রকিবুজ্জামান পলাশ নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ২০২০ সালের ৭ মার্চ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০২২
এনটি