ফরিদপুর: ড. যশোদা জীবন দেবনাথ। মানবিক সেবা নিয়ে প্রতিনিয়তই জনগণের কাছে যাচ্ছেন।
এবার পুলিশের কল্যাণে এগিয়ে এসেছেন তিনি। স্থাপনাসহ লিখে দিয়েছেন নিজের ব্যবহৃত পৈতৃক ৫০ শতাংশ জমি। জেলা পুলিশের আধুনিক তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য অনুদান হিসেবে তিনি এ সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামানের কাছে দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগে জেলাব্যাপী ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেছেন তিনি।
শুক্রবার (২৫ মার্চ ) ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জমির দলিল হস্তান্তর করেন তিনি। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জামাল পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ইমদাদ হোসেন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুলসহ পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অনুদান হিসেবে পাওয়া ওই জমির ওপর নির্মাণ করা হবে আধুনিক মানের পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। যেখানে জেলার সব থানার পুলিশ কর্মকর্তারা জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এছাড়া জনকল্যাণমূলক কাজেও ব্যবহার করা হবে জমিটি।
জমির বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা হলেও তা দান করার পেছনে মহৎ উদ্দেশ্য আছে বলে জানিয়েছেন যশোদা জীবন দেবনাথ।
তিনি মনে করেন, পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তা এমনকি এমপি-মন্ত্রী না হয়েও যে জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত হওয়া যায়, এটি তার একটি উদাহরণ।
জানা গেছে, দানকৃত সম্পত্তি ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার অন্তর্গত ১ নম্বর তফশিল ধাপোডাঙ্গা মৌজার জে, এল নম্বর- সাবেক ৮০, হাল ২৬। এস এ ১২৫৭, বি,এস চূড়ান্ত ৬৬৭, প্রস্তাবিত ১৭৫২ নম্বর খতিয়ান। জমির পরিমান ৫০ শতাংশ।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, ওই এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণের জন্য চার কোটি টাকা দামের আমার নিজের জমি আজ জেলা পুলিশকে রেজিস্ট্রি করে দিলাম। স্থাপনাও করে দিয়েছি। ফাঁড়ি অনুমোদন হলে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও দেওয়া হবে।
জমি দানের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ ও এলাকাবাসী প্রশংসা করে বলেন, এ ধরনের উদ্যোগ মহৎ ও বিরল।
এ জনহিতকর সমাজের অন্যান্য ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মাঝে উদ্যম সৃষ্টি করবে এবং জনসেবামূলক কাজে নিজেদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, এভাবে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে সমাজের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। বর্তমানে ফাঁড়ি অনুমোদন দেওয়া হয় না, তাই ওই জমিতে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র চালু করা হবে। যা কোতোয়ালি থানার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তদন্ত কেন্দ্র থেকে সাধারণ মানুষ সব ধরনের সহযোগিতা পাবেন, শুধুমাত্র মামলা দায়ের করা ছাড়া।
উল্লেখ্য, লেখক ড. যশোদা জীবন দেবনাথকে বাংলাদেশ ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং জগতের প্রবক্তা বলা হয়ে থাকে। তিনি বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক। তার প্রতিষ্ঠান টেকনো মিডিয়া লিমিটেড দেশের ব্যাংকগুলোর এটিএম মেশিন ও কার্ডের সিংহভাগ সরবরাহ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২২
আরএ
