ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ মে ২০২৪, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পরের দিনের টিকিটের জন্য আগের দিন লাইনে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
পরের দিনের টিকিটের জন্য আগের দিন লাইনে কমলাপুর রেলস্টেশনে টিকিটের জন্য ভিড় করেছেন মানুষজন | ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: টিকিট বিক্রি শেষ। তখনো কাউন্টারের সামনে বেশ কয়েকজন মানুষের ভিড়।

একটু এগিয়ে গিয়ে টিকিট পেয়েছেন কিনা জানতে চাইলে উত্তর আসে—আমরা আজকের না, আগামীকালের টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়াইছি ভাই!

সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে এমন চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে। ঈদের আগে ট্রেন যাত্রায় অগ্রিম টিকিট এখন যেন সোনার হরিণ। তাই তো কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেতে আগের দিন দুপুর থেকেই স্টেশনে কাউন্টারের সামনে পরের দিনের টিকিটের জন্য হাজির টিকিটপ্রত্যাশীরা।

কাউন্টারের সামনে এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হলে জানা যায়, ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট কিনতে প্রতিদিনই কমলাপুর রেলস্টেশনে কাউন্টারগুলোয় টিকিটপ্রত্যাশীদের দীর্ঘ সারি। কেউ স্টেশনে আসেন সাহ্‌রি খেয়ে, কেউবা আসেন আগের দিন রাতে বা বিকেলে। কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেতে বেগ পেতে হয়, তাই আগের দিন দুপুরেই স্টেশনে এসেছেন তারা।


রাজধানীর খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়ার বাসিন্দা মো. লিটন এবার ঈদ করবেন গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। ঈদ উদযাপন করতে ৩০ এপ্রিল সপরিবারে বাড়ি যেতে চান তিনি। এ জন্য ট্রেনে তিনটি শোভন চেয়ারের টিকিট প্রয়োজন। ৩০ এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু হবে মঙ্গলবার সকাল আটটায়। সোমবার দুপুরেই তিনি রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে হাজির হয়েছেন।

লিটন বলেন, সড়কে যেতে যানজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর ট্রেনে বাড়ি গেলে কোনো জ্যাম থাকে না। কিন্তু ট্রেনের টিকিট সোনার হরিণ। অনলাইনে কয়েকবার চেষ্টা করেছি। টিকিট পাইনি। টিকিট যেন হাতছাড়া না হয়, এ কারণে একদিন আগেই স্টেশনে এসেছি। ইফতার করব স্টেশনেই। বাইরে থেকে খাবার কিনে আনব। একইভাবে রাতে খাব, সাহ্‌রিও করব। এখানেই রাতটা পার করে দেব। রাতে এই স্টেশনেই সবার সঙ্গে গল্পগুজব করব। প্রতিবার বাড়ি যাই ট্রেনে। প্রতিবারই এই ভোগান্তি দেখি।

পেশায় রাজমিস্ত্রি লিটন সঙ্গে এনেছেন একটি চাদর। সেটি বিছিয়ে বসেছেন কাউন্টারের সামনের মেঝেতে। কাউন্টারগুলো ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি কাউন্টারের সামনেই লিটনের মতো সাত থেকে আটজন টিকিটপ্রত্যাশী। তারা সবাই ৩০ এপ্রিলের টিকিট কাটতে সোমবারে স্টেশনে এসে দাঁড়িয়েছেন।

রাতে কীভাবে স্টেশনে থাকবেন, জানতে চাইলে তারা বলেন, রাতে আমরা পেপার বিছিয়ে বসেই রাত কাটিয়ে দেবো। স্টেশনে বসে আগে পিছের ভাইদের সঙ্গে লুডু খেলব, তাস খেলব। গল্পগুজব করে সময়টা বেশ ভালোভাবে পার হয়ে যাবে বলেই আশা রাখছি।

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শনিবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনসহ পাঁচটি স্থানে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। সোমবার (২৫ এপ্রিল) ছিল অগ্রিম টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিন। সকাল আটটা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এ দিন বিক্রি হয়েছে ২৯ এপ্রিলের টিকিট। মঙ্গলবার বিক্রি হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বলেন, আশা করছি, সবাই সুষ্ঠুভাবেই টিকিট পাবেন। কাউন্টারে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয় সেজন্য রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী, রেলপুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা সহযোগিতা করছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।