ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

যেভাবে চোরাই আইফোনের নিয়ন্ত্রণ নিতো চক্রটি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
যেভাবে চোরাই আইফোনের নিয়ন্ত্রণ নিতো চক্রটি

ঢাকা: নিরাপত্তার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা আইফোন চুরির পরও এর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতো একটি চক্র। আইটি এক্সপার্টের সহায়তায় কৌশলে ব্যবহারকারীর কাছ থেকেই হাতিয়ে নেওয়া হতো তথ্য।

এরপর আইফোনের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সব তথ্য মুছে দিয়ে বিক্রি করা হতো অন্য কোথাও।

ফোন চুরি ও ছিনতাইয়ের পর পুনরায় বাজারজাতে জড়িত ওই চক্রের মূলহোতাসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. জাকির হোসেন, জিয়াউল মোল্লা, আরিফুল ইসলাম, শাহ আলম কাজল, সাইফুল ইসলাম লাভলু, নুর আলম, আনোয়ার হোসনে নান্টু, জামাল, কামাল, আবব্দুল শুকুর সোহেল, আব্দুল মান্নান ওরফে সুমন, নজরুল ইসলাম ও আইটি এক্সপার্ট খোরশেদ আলম ওরফে রাজা।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীসহ গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

এ সময় তাদের হেফাজত থেকে ১৫৩টি মোবাইল, ২টি হার্ড ডিস্ক, ৩টি ডঙ্গল, ৪৯টি সিম ও ৩০টি মেমোরি কার্ড জব্দ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল চুরি ও ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। তারা গাড়ি নিয়ে বিভিন্ন জনসমাগমস্থল, বাস টার্মিনাল, ট্রেন স্টেশন ও মার্কেটে অবস্থান করে মোবাইল চুরি/ছিনতাই করেন। মোবাইল চুরির পর বন্ধ করে অন্য সদস্যের কাছে দিয়ে আবারও চুরির কাজে লেগে যায় একটি গ্রুপ।

পরবর্তীতে চুরি করা মোবাইলগুলো সফটওয়্যার ব্যবহার করে আইএমইআই পরিবর্তন ও স্ক্রিনলক খুলে লোকাল মার্কেটে বিক্রি করে।

তবে আইফোনের লক খোলার ক্ষেত্রে এ চক্রের সদস্যরা আইটি এক্সপার্ট খোরশেদ আলম ওরফে রাজার সহায়তা নেওয়া হতো জানিয়ে তিনি বলেন, আইফোন চুরির পর চক্রের সদস্যরা রাজার সঙ্গে অনলাইনে যোগাযোগ করতেন। ‌‘অ্যাপল সাপোর্ট সার্ভিস’ নামে রাজা চোরাই মোবাইলের প্রকৃত মালিকের কাছে ফিশিং লিংক পাঠাতেন।

ফোনের মালিক সত্যিকার অ্যাপলের অফিসিয়াল লিংক মনে করে প্রকৃত আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে ওই লিংকে ঢুকলেই রাজা আইক্লাউডের সব তথ্য পেয়ে যেতেন। এভাবে রাজা আইক্লাউডের তথ্য রিমুভ করে চোরাই মোবাইলফোনটি বিক্রির জন্য প্রস্তুত করতেন।

তিনি আরও বলেন, যেসব আইফোন ব্যবহারকারী রাজার পাঠানো ফিশিং লিংকে ব্যক্তিগত তথ্য না দিতেন, সেগুলো তিনি কিট প্রো সাইট ব্যবহার করে ২৫/৩০ ডলারের বিনিময়ে আইক্লাউড রিমোভের রিকুয়েস্ট পাঠাতেন। কখনো কখনো ব্রিলিয়ান্ট নাম্বার ব্যবহার করে মালিকের কাছে ফোন দিতেন। নিজেকে বিটিআরসির কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে হারানো ফোনের আইক্লাউড ও স্ক্রিনলকের তথ্য সংগ্রহ করতেন।

কারো আইফোন হারিয়ে গেলে ফোনে তথ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকা ও কোন ফিশিং লিংকে ঢোকার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন ডিবির ওই কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০২২
পিএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।