ঢাকা: অবসর নেওয়া বিচারকদের জন্য উৎসব ভাতা ও বাংলা নববর্ষ ভাতার বিধান রেখে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন’ ২০২২ বিল সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক ‘সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (লিভ, পেনশন এন্ড প্রিভিলেজ) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ রহিত করে পুন:প্রণয়ন করা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন’ ২০২২ বিল সংসদে উপস্থাপন করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।
এ বিলে বিচারকদের পূর্ণ বৎসরের জন্য অতিরিক্তি পেনশন হিসেবে মাসিক সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৫শত টাকা দেওয়া এবং প্রধান বিচারপতির অবসরোত্তর সুবিধাদি গত বছরের মে মাস থেকে কার্যকর গণ্য করার বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া বিলে অবসরের পর বিচারকরা যে পরিমাণ গ্রস-পেনশন প্রাপ্য হবেন, তার অর্ধেক বাধ্যতামূলকভাবে সমপর্নের বিধান রাখা হয়েছে। বিলটি উপস্থাপনের পর এটি পরীক্ষা করে সংসদে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোন বিচারক র্পূণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকলে মাসিক বেতনের সমহারে এবং অর্ধ গড় বেতনের ছুটিতে থাকাকলে মাসিক বেতনের অর্ধেক হারে ছুটিকালীন বেতন পাবেন। পূর্ণ গড় বেতনে প্রদত্ত ছুটি, অর্ধ গড় বেতনে প্রদত্ত ছুটির দ্বিগুণ হিসেবে গণনা করা হবে। তবে অর্ধ গড় বেতনে প্রাপ্য ছুটির হিসাব সংরক্ষিত থাকতে হবে। কোনো বিচারক তার মোট কর্মকালীন ছুটির শর্তানুযায়ী অর্ধ গড় বেতনে ৩৬ মাস ছুটি ভোগ করতে পারবেন। এছাড়া পূর্ণ গড় বেতনের ছুটি একালীন পাঁচ মাস এবং অন্য কোনো ছুটি ১৬ মাসের অধিক হবে না।
আরও বলা হয়েছে, কোনো বিচারক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ বা অবসর নিলে কোনো ছুটি মঞ্জুর করা হবে না। কোনো বিচারক অনভিপ্রেত আঘাতে আহত হয়ে কাজ করতে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতা ছুটি প্রাপ্য হবেন। এছাড়া কোনো বিচারক অনুমোদিত ছুটি বা অবকাশের অতিরিক্ত অনুপস্থিতিকালের জন্য বেতন প্রাপ্য হবেন না। ছুটি মঞ্জুরের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সংরক্ষিত।
বিলে পেনশনের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, কমপক্ষে পাঁচ বছর পেনশনযোগ্য কর্মকাল সমাপ্তির পর বা অবসর নেওয়ার বয়সসীমা পৌঁছার আগে অসুস্থতাজনিত কারণে অবসরে গেলে বা অপসারিত হলে বা দশ বছর পেনশনযোগ্য কর্মকাল সমাপ্তির পর বা অবসর নেওয়ার বয়সসীমায় পৌঁছার আগে পদত্যাগ করলে বিচারকরা পেনশন সুবিধা পাবেন। এক্ষেত্রে জুডিশিয়াল সার্ভিসে কর্মরত বিচারকদের জন্য নিজস্ব সার্ভিসের অনুমোদিত হিসেবে পেনশন প্রাপ্য হবেন। এছাড়া অস্থায়ী প্রধানবিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় স্থায়ী নিয়োগ পেলে অস্থায়ী কর্মকাল স্থায়ীকাল হিসেবে গণ্য হবে। মাসিক পেনশন সাকূল্যে সর্বশেষ উত্তোলিত বেতনের বেশি হতে পারবে না। বিলে বিচারকদের আঘাতজনিত আনুতোষিক এবং পেনশন সুবিধা পৃথকভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের প্রদত্ত রায়ে সংবিধানের ৭ম সংশোধন বাতিল ঘোষিত হয়। পরবর্তিতে ২০১৩ সালের স নং আইন দ্বারা ‘সুপ্রিম কোর্ট জাজেস (লিভ, পেনশন এন্ড প্রিভিলেজ) অর্ডিন্যান্স, ১৯৮২ কার্যকর রাখা হয়। অধ্যাদেশটির আবশ্যকতা ও প্রাসঙ্গিকতা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে বাংলায় নতুন আইন আকারে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) আইন’ বিল ২০২২ প্রণয়ণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৭, ২০২২
এসকে/এসএ