ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

কিশোরগঞ্জে সরকারি জায়গা দখল করে বিএমএ’র অফিস ভবন নির্মাণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
কিশোরগঞ্জে সরকারি জায়গা দখল করে বিএমএ’র অফিস ভবন নির্মাণ

কিশোরগঞ্জ: কিশোরগঞ্জে সরকারি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ করছে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কিশোরগঞ্জ শাখা।  

দখলকৃত জায়গায় যেখানে বিএমএর অফিসটি নির্মাণ করা হচ্ছে তার আশপাশেই অন্যান্য সরকারি অফিসও রয়েছে।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গাইটাল এলাকায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্রের বিশাল সম্পত্তি রয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে এই পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্রের সম্পত্তিতে অনেক সরকারি অফিস-আদালত গড়ে উঠেছে। বেশ কয়েক বছর আগে কিশোরগঞ্জ সরকারি বক্ষব্যাধি ক্লিনিক সংলগ্ন ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সামনের কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সরকারি খালি জায়গা দখল করে নেয় বিএমএ কিশোরগঞ্জ শাখার নেতৃবৃন্দ। এরপর সেখানে অস্থায়ী টিনের ঘর নির্মাণ করা হয়। পরে দখলকৃত জায়গায় বিএমএর কার্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক অ্যাডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান। ওই সময় বিএমএ কর্তৃক দখল করে নেওয়া সরকারি জায়গা নিয়ে একাধিক পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে বিএমএ’র অফিস ভবন নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।  

এদিকে কয়েকদিন আগে দখলকৃত সরকারি জায়গায় বহুতল অফিস ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কিশোরগঞ্জ শাখা। দিনরাত অফিস ভবন নির্মাণের কাজ করছেন ঠিকাদার ও তার লোকজন। ভবন নির্মাণ কাজ শুরুর দিন কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলাম এসেছিলেন বলে জানা যায়। আর এসব কাজ করা হচ্ছে বিএমএ’র কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদলের তত্ত্বাবধানে।

ভবন নির্মাণ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব কন্ট্রাক্টর আবুল কালাম বাংলানিউজকে জানান, ডাক্তাররা তাকে কাজের জন্যে নিয়োগ করেছে। তিনি নির্মাণ শ্রমিক সংগ্রহ করে ভবন নির্মাণের কাজ করে দিচ্ছেন। এখানে তিনতলা বিল্ডিং নির্মিত হবে বলে জানান তিনি।  

অপরদিকে কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলানিউজকে জানান, স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয়ের গেট ও বাউন্ডারি ওয়াল ছিল। বিএমএ’র নেতারা বাউন্ডারি ওয়াল ভেঙে ফেলেছে। তাদের অফিসের সামনে ও পেছনে রেখে বিএমএ’র ভবন নির্মাণ কাজ পুরোদমে চলছে। সরকারি জায়গা দখল করে বেসরকারি অফিস করা হচ্ছে। যারা বিএমএ’র ভবন নির্মাণ করছেন তাদের হাতে কোনো কাগজপত্র নেই। ভবিষ্যতে বক্ষব্যাধি ক্লিনিক সম্প্রসারণ হলে জায়গার সংকটে পড়বে। অবৈধ ভবন নির্মাণ বন্ধ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।  

এ প্রসঙ্গে পাট গবেষণা আঞ্চলিক কেন্দ্র কিশোরগঞ্জের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আশরাফুল আলম বাংলানিউজকে জানান, পাট গবেষণা কেন্দ্রের অনেক জায়গায় অফিস-আদালত গড়ে উঠেছে। বিএমএ’র অফিস ভবন নির্মাণের বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পাট গবেষণা কেন্দ্রের জায়গা হলে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদল বাংলানিউজকে জানান, অনুমোদন তো আছেই। সবই আছে। না হলে কি আর হয়। ১৯৯৪ সাল থেকে বিএমএ’র একটি অফিস ছিল। চিকিৎসকদের একটা কনফারেন্স রুম হচ্ছে। এটা সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানেই থাকবে।  

এদিকে বিএমএ’র অফিস ভবন নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি  অফিস ভবন নির্মাণ কাজ দেখতে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।