ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

এক বছরে ২০ হাজার মাদক মামলা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৬ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২২
এক বছরে ২০ হাজার মাদক মামলা হয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ঢাকা: ২০২১ সালে বিপুল পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্ধ করে ২১ হাজার ৯৯২ জনের বিরুদ্ধে ২০ হাজার ৫৯২টি মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। একই সঙ্গে মাদকের চাহিদা কমাতে পরিচালিত মাদকবিরোধী গতানুগতিক প্রচার কার্যক্রমের পরিবর্তে অধিদপ্তর সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানান তিনি।

রোববার (২৬ জুন) সচিবালয়ে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস, ২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য উৎপাদনকারী দেশ নয়। এ দেশে বাইরের দেশ থেকে বিভিন্ন পথে মাদকদ্রব্য পাচার হয়ে আসে। আমাদের দেশে মাদকদ্রব্যের পাচার এবং এর অবৈধ ব্যবহার বন্ধ করার জন্য পুলিশ, বিজিবি, কোস্টগার্ড, র‍্যাব, কাস্টমস ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। ২০২১ সালে সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করে ইয়াবা ট্যাবলেট, হেরোইন, গাঁজা, গাঁজা গাছ, ফেনসিডিলসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য জব্ধ করে ২১ হাজার ৯৯২ জনের বিরুদ্ধে ২০ হাজার ৫৯২টি মামলা করা হয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদকাসক্তদের চিকিৎসাসেবা বাড়াতে সরকারি হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি বেসরকারি নিরাময়কেন্দ্রের লাইসেন্স সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রগুলোর কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিগুলো মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রসমূহ নিয়মিত মনিটরিং করছে। মাদকাসক্তদের চিকিৎসার একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকা জরুরি বিবেচনায় জাতীয় মাদকবিরোধী কমিটির সিদ্ধান্ত মতে মাদকাসক্তদের চিকিৎসার পদ্ধতি সম্পর্কে জাতীয় গাইডলাইন তৈরির জন্য একটি কারিগরি কমিটি বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে কর্মশালা ও সভা করে গাইডলাইনের খসড়া চূড়ান্ত করছে।

মিয়ানমার থেকে মাদকদ্রব্য আসছে, সেখানে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন—এমন প্রশ্নেন জবাবে মন্ত্রী বলেন, ইয়াবা ও আইস নামে একটি ভয়ঙ্কর মাদক মিয়ানমার থেকে এসেছে। মিয়ানমারকে আমরা বহু অনুরোধ করেছি, তারা অনেক কথা বলে কিন্তু কোনটাই তারা কার্যকর করে না। প্রতিশ্রুতি অনেক কিছুই দেন কিন্তু কোনটাই কার্যকর করে না। তাদের ইয়াবা সরবরাহ বন্ধ করার জন্য বলেছি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেকেই মিয়নমার থেকে ইয়াবা আনছে, তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা ফাঁক-ফোকর দিয়ে ইয়াবা আনার চেষ্টা করছে। যেখানে অভিযোগ পাচ্ছি, সেখানে আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা আমাদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছি। বর্ডার লাইনে একটা সেন্সর করারও পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মাদকের অপব্যবহার রোধে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং মাদকাসক্তির চিকিৎসার বিষয়ে সর্বসাধারণকে অবহিত ও উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্য নিয়ে ১৯৮৮ সাল থেকে প্রতি বছর ২৬ জুন জাতিসংঘ ঘোষিত ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস’ বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। মাদকের করাল গ্রাস থেকে বিশ্ববাসীকে রক্ষা করার জন্য জনসচেতনা সৃষ্টি এবং মাদকের ভয়াবহতার মর্মস্পর্শী ও করুণচিত্র বিশ্বের সর্বস্তরের জনগণের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে মাদকবিরোধী ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলাই এ দিবস পালনের মূল লক্ষ্য।  

মাদকদ্রব্যে প্রতিরোধ দিবসে এ বছরের প্রতিপাদ্য হলো—মাদক সেবন রোধ করি/সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।