ঢাকা, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা: উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৩৬ জনের নামে মামলা

হারুন-অর-রশীদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৩ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা: উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ৩৬ জনের নামে মামলা সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মো ওয়াদুদ মাতুব্বর

ফরিদপুর: ফরিদপুরের সালথা উপজেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধা এলেম শেখের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে সালথা উপজেলা চেয়ারম্যানকে।

মঙ্গলবার (১২ জুলাই) দুপুরে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বাংলানিউজকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, রোববার (৯ জুলাই) দিনগত রাতে সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ মাতুব্বরকে প্রধান আসামি করে ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী জয়গুন বেগম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার অন‌্য আসামিরা হলেন- একই উপজেলার সায়েম মিয়া টিটন, মানিক মাতুব্বর, নূর ইসলাম মাতুব্বর, বিল্লাল মোল‌্যা, আসলাম মোল‌্যা, হোসেন শরীফ, জব্বার মাতুব্বর, বক্কার মাতুব্বর, শামীম মৃধা, সেলিম মৃধা, শহীদ কাজী, বাকা কাজী, রইচ কাজী, ওহিদ কাজী, মারুফ কাজী, এসকেন্দার কাজী, আতিক মৃধা, মুক্তার মৃধা, রিফাত মৃধা, রিয়াদ মৃধা, জামাল মাতুব্বর, ফবির শেখ, মিনহাজ শেখ, মুনসুর মৃধা, আকরাম মোল‌্যা, লিয়াকত মোল‌্যা, রুমন শেখ, মুরাদ শেখ, মিজান শেখ, সাহেব আলী কাজী, ইয়াদ আলী কাজী, আইয়ুব আলী কাজী, সাঈম কাজী, শাহিন কাজী, নাঈম কাজী।

সোমবার (১১ জুলাই) এ ঘটনার বিচার দাবি করে ও অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড সালথা উপজেলা শাখার আয়োজনে একটি মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সালথা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের সামনে এ মানববন্ধন করা হয়।

ভাঙচুরের মামলায় এখনো কোনো আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় মানববন্ধনে বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আসামিদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা না হলে সারাদেশে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের নিয়ে বড় আকারে কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানান তারা।

মানববন্ধনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক দলের নেতা ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন চলাকালীন সময় সভাস্থলে অ্যাম্বুলেন্সে করে উপস্থিত হন আহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এলেম শেখ।

অভিযোগ রয়েছে- গত ৮ জুলাই সন্ধ্যায় উপজেলার গট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু জাফর মোল্ল্যার ওপর দুর্বৃত্তরা হামলা করে। এ সময় তিনি দৌঁড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা এলেম শেখের বাড়িতে আশ্রয় নিলে হামলাকারীরা ওই মুক্তিযোদ্ধার বসতবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। আর এসব করিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এছাড়া এলেম শেখ ও তার স্ত্রী জয়গুন বেগমকে মারধর করা হয় বলে জানায় ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।

পরবর্তীতে ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে ৯ জুলাই জয়গুন বেগম সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বরসহ মোট ৩৬ জনকে আসামি করে সালথা থানায় মামলা করেন।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে সালথা উপজেলা চেয়ারম্যান মো ওয়াদুদ মাতুব্বর বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার ওপর কিংবা তার বাড়িতে হামলার সঙ্গে আমি জড়িত নয়। আমার বিরুদ্ধে উপজেলায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে মানববন্ধন করেছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটা গ্রুপ কাজ করছে। আমি কেন দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা করবো? এগুলো সবই বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

এ বিষয়ে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বাংলানিউজকে বলেন, গত ৯ জুলাই রাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এলেম শেখের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। এখনো কোনো আসামিকে আমরা গ্রেফতার করতে পারিনি। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান (সদ্য অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) বাংলানিউজকে বলেন, সালথায় এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে। আশা করছি, অতি শিগগিরই তদন্ত পূর্বক প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।

আ. লীগের সভাপতি আহত জাফর মোল্যা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে এখন বাড়িতে আছেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২২
জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।