ঢাকা, সোমবার, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ মে ২০২৪, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

প্রথমবার সিরাজগঞ্জের শ্বশুরবাড়ি এলেন ইন্দোনেশিয়ান নারী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০২২
প্রথমবার সিরাজগঞ্জের শ্বশুরবাড়ি এলেন ইন্দোনেশিয়ান নারী

সিরাজগঞ্জ: এবার স্মৃতি নূরানী নামে এক ইন্দোনেশিয়ান তরুণীকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে এলেন সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুরের মালয়েশিয়া প্রবাসী যুবক আনোয়ার হোসেন (২৬)।

গত ১৬ আগস্ট ইন্দোনেশিয়ান স্ত্রীকে নিয়ে দেশে আসেন আনোয়ার হোসেন।

পরে মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বাংলাদেশ মুসলিম শরিয়ত মোতাবেক রেজিষ্ট্রি কাবিন মূলে দ্বিতীয় দফায় তাদের বিয়ে হয়।

আনোয়ার হোসেন শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মৃত নজর আলীর ছেলে। প্রায় দেড় বছর আগে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে সেখানের রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে হয়েছিল। স্মৃতি নুরানি ইন্দোনেশিয়ার পারিজাত কুলন থানাধীন কেটরোসনা গ্রামের মাহাব উদ্দিনের মেয়ে।

আনোয়ার হোসেন জানান, ৭ বছর আগে জীবিকার উদ্দেশ্যে তিনি মালয়েশিয়া পাড়ি জমান। কুয়ালালামপুরে পেথেনজি নামে একটি ইলেকট্রিক কারখানায় চাকরি পান তিনি। সেখানে কর্মরত অবস্থায় সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্মৃতি নূরানীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ইন্দোনেশিয়ান হলেও স্মৃতি নুরানী মালয়েশিয়ার এমকা ডোয়া মানডুম কলেজের দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ালেখা করতেন এবং একটি ক্লিনিকের সেবিকা হিসেবে চাকরি করতেন।

এভাবে ২ বছর চলার পর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেম থেকে পারিবারিক সম্মতিক্রমে মালয়েশিয়ান রীতি অনুযায়ী একটি মসজিদে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর তারা মালেয়শিয়ায় প্রায় দুই বছর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সংশার করেন।

তিনি আরও বলেন, আমি মালয়েশিয়ান ভাষা শিখেছি। মালয়েশিয়া আর ইন্দোনেশিয়ান ভাষা অনেকটা মিল আছে। এ কারণেই আমরা উভয়ে উভয়ের ভাষা বুঝতাম। স্মৃতি বাংলা ভাষা শিখতে চায়। আমি তাকে ধীরে ধীরে বাংলা শেখাচ্ছি। ইতোমধ্যে সে কিছু কিছু বাংলা বলতেও পারে। আমরা ইন্দোনেশিয়ায় বেড়াতে যাবো। সে কারণেই বাংলাদেশে এসেছি। ইন্দোনেশিয়ান ভিসা পেতে আমার চেয়ারম্যানের সনদসহ বিয়ের কাগজপত্র লাগবে। এ কারণেই দেশে এসে কাবিন নামা করা হলো। স্মৃতির বাবার বাড়ি থেকে ঘুরে এসে দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাই।

ইন্দোনেশিয়া ভাষায় স্মৃতি নুরানী বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে আনোয়ারকে ভালোবেসে ফেলি। সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বাবাকে জানাই। বাবার সম্মতিতে আমাদের মধ্যে বিয়ে হয়। বিয়ের পরে ইন্দোনেশিয়া থেকে মালয়েশিয়ায় আনোয়ারের কাছে চলে যাই।

ভাঙা-ভাঙা বাংলায় তিনি বলেন, বাংলাদেশে এসে খুব ভালো লাগছে। এখানকার মানুষ অনেক ভালো। আপনারা দোয়া করেন আমরা যেন সুখে থাকি।

আনোয়ারের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, আমরা এ বিয়ে মেনে নিয়েছি। মেয়েটা অনেক ভালো। আদব কায়দা-কথাবার্তা ভালো লেগেছে।

কৈজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন খোকন বলেন, গোপালপুর গ্রামের আরোয়ার নামে এক যুবক ইন্দোনেশিয়ান তরুনীকে বিয়ে করে এনেছে। সম্প্রতি শাহজাদপুর কোর্টে তাদের বিয়ে হয়েছে। বিষয়টি এলাকাবাসী ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা জানতে পেরেছি মালয়েশিয়ান প্রবাসী এক যুবক ইন্দোনেশিয়ান তরুনীকে বিয়ে করে নিয়ে এসেছেন। স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আমরা খোঁজ-খবর নিয়েছি। তারা দেশে এসে বাংলাদেশী আইন অনুসারে আবার বিয়ে করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।