মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়ার নয়াপাড়া কৈট্টা এলাকায় সরকারি রাস্তার পাশ থেকে লাখ টাকা মূল্যের গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মফেজ উদ্দিন (৫০) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধির বাঁধা উপেক্ষা করেই রাস্তার পাশ থেকে গাছগুলো কাটা হচ্ছে এমনটাই দাবি ওই ওয়ার্ডের মেম্বারের।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা মেলে দুটি মেহগনি গাছ কেটে পাশের জমিতে ফেলে রাখা হয়েছে। বাকি আরও তিনটি গাছ কাটার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে মফেজ উদ্দিনের গাছ কাটার শ্রমিকরা। মফেজ উদ্দিন উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের নয়াপাড়া কৈট্টার এলাকার মৃত হাবু মিয়ার ছেলে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জেলার সাটুরিয়া উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের নয়াপাড়া কৈট্টা এলাকায় সবুজে ঘেরা পায়ে হাঁটার কাঁচা রাস্তার দু-ধারে বেশ বড় বড় বাহারি গাছের সারি রয়েছে। রাস্তার ধারের জমির মালিক (মফেজ উদ্দিন) নিজের হাতে বপণ করা গাছ বলে অবাধে গাছ কাটছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ওয়ার্ড মেম্বার উত্তম কুমার হালদার মৌখিকভাবে বাঁধা দিলেও তার এই বাঁধায় কোনো কর্ণপাত না করে এরই মধ্যে দুটি গাছ কেটে নিয়েছে। স্থানীয় লোকজন ও মেম্বারের দাবি এই গাছগুলো ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় আনুমানিক প্রায় এক যুগের বেশি সময় আগে বপণ করা হয়।
অপরদিকে মফেজ উদ্দিন দাবি করে বলেন, এই গাছগুলো আমি আমার জমিতে বপন করেছি, এই রাস্তা সরকারি রাস্তা না। এই রাস্তার কাগজপত্র ও আর এস রেকর্ড এখনো আমার নামে তবে কিভাবে এই রাস্তা সরকারি হয়।
ইউনিয়ন ভূমি অফিস থেকে লোকজন গেলে তাদের কোনো পাত্তা না দিয়েই গাছ কাটছে এমনটাই বলেন উপ-সহকারী ভূমি কর্মকর্তা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার উত্তর কুমার হালদার বলেন, আমি গতকাল রাতে জানতে পারি যে মফেজ উদ্দিন রাস্তার ধারের গাছ কাটবে, তাই আজ তাকে গাছ কাটতে মৌখিকভাবে নিষেধ করি। রাস্তার গাছ কার এ বিষয়গুলো তাকে বুঝাতে গেলে তিনি আমার কোনো কথা না শুনেই গাছ কাটতে শুরু করে। যেহেতু তিনি সমাজে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি, এটা সরকারি রাস্তা, তাই আমি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েবকে বিষয়টি অবগত করি।
অভিযুক্ত মফেজ উদ্দিন বলেন, আমি পৈত্রিক জায়গা থেকে গাছ কাটছি, এছাড়া এই গাছগুলো আমার নিজের হাতে বপণ করা। আমার বিরুদ্ধে কেউ হয়-তো অপপ্রচার করছে যে আমি সরকারি জমি থেকে গাছ কাটছি। যে রাস্তা দেখছেন এই রাস্তা কোনো সরকারি রাস্তা না এটা সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত জমির ওপর দিয়ে পায়ে হাঁটার রাস্তা। আপনার নিজের রাস্তায় সরকারিভাবে ইট সলিং কিংবা ব্রিজ করেছে সরকার কেন এমন প্রশ্ন করল তিনি তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
ধানকোড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা আবু তাহের বলেন, আজ সকালে ওই এলাকার স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারের মাধ্যমে জানতে পারি, সরকারি রাস্তার পাশ থেকে গাছ কাটছে মফেজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। খবরটি শুনার সঙ্গে সঙ্গে আমার অফিস থেকে লোক পাঠাই কিন্তু মফেজ উদ্দিন তাকে কোনো পাত্তা দেয়নি বলেও জানান এই নায়েব।
সাটুরিয়া বন বিভাগের কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, উপজেলার ধানকোড়ার নয়াপাড়া কৈট্টা এলাকায় আমাদের বন বিভাগের কোনো বনায়ন নেই তবে এটা হয়তো ইউনিয়ন পরিষদের বনায়ন হবে বলেও মন্তব্য করেন এই বন কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আরা বলেন, সরকারি রাস্তার পাশ থেকে গাছ কাটার কোনো সুযোগ নেই, কেউ যদি এই ধরনের কাজ করে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২
আরএ