ঢাকা: বাংলাদেশের ৭৪ শতাংশ নাগরিক মনে করেন উইঘুর মুসলিমদের প্রতি দমনমূলক আচরণ করছে চীন সরকার। আর ২৪ শতাংশ বাংলাদেশি মনে করেন, শুধু ধর্মীয় পরিচয়ের জন্য তারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে এক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ’ গত সপ্তাহে বাংলাদেশে ‘চীনের জাতীয় ভাবমূর্তি’ শীর্ষক এক জরিপের তথ্য ও ফলাফল প্রকাশ করেছে।
এতে বাংলাদেশের ৫ হাজার ২০০ লোকের মতামত নেওয়া হয়। তারা বাংলাদেশ ও চীন সম্পর্কে নানা বিষয়ে মতামত দিয়েছেন। জরিপে বাংলাদেশের ৩২টি জেলা, ৮টি বিভাগীয় শহর ও ১২টি মেট্টোপলিটন শহরের লোক অংশ নিয়েছেন। এর মধ্যে ছিলেন ৬৬ শতাংশ পুরুষ ও ৩৪ শতাংশ নারী।
জরিপের তথ্যমতে, বাংলাদেশের ২১ শতাংশ লোক উইঘুর মুসলিমদের বিষয়ে কিছু জানেন না। আর মাত্র ২ শতাংশ লোক মনে করেন এটা পশ্চিমাদের মিথ্যা প্রচারণা। ১৫ শতাংশ লোক মনে করেন, এটা মূলত চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ৩ শতাংশ লোক মনে করেন উন্নয়নের কারণেই সেখানে এমনটি ঘটছে। ১০ শতাংশ লোক মনে করেন সেখানে ঐক্যবদ্ধ সমাজ তৈরি করা হচ্ছে। ১ শতাংশ লোকের উইঘুর নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই।
ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেছেন, উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে পশ্চিমা গণমাধ্যম অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। কেননা চীন সরকার বিশেষ কোনো ধর্ম ও বর্ণের প্রতি কোনো পক্ষপাতিত্ব করে না।
তিনি আরো বলেন, চীনের উইঘুরেই শুধু মুসলমানরা অবস্থান করেন না। চীনের আরও বিভিন্ন স্থানে মুসলমানরা থাকেন, তবে সেসব মুসলিমদের নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। শুধু উইঘুর মুসলিমদের নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও সেণ্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ চীন সম্পর্কে কী ভাবেন, সেটা জানতেই এই জরিপ করা হয়েছে। জরিপের ফলাফল আগামী দিনে দুই দেশের সম্পর্ক জোরদারে আরও সহযোগিতা করবে।
চীনের শিনজিয়ান প্রদেশে ১ কোটি ২০ লাখ উইঘুর মুসলিমের বসবাস। এসব মুসলিমদের ওপর নানা ধরনের নিপীড়ন চালানো হয় বলে অভিযোগ করে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো। এমনকি জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাও সেখানে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। তবে চীন বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
টিআর/এমজেএফ