পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর বিভিন্ন আন্তঃউপজেলার সড়কের দু’ধারে সারি সারি বিভিন্ন প্রজাতির অসংখ্য মরা গাছ দাঁড়িয়ে আছে। ২-৩ বছর আগের মরা গাছগুলো এখন শুকিয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।
অন্যদিকে মূল্যবান গাছগুলো মরে নষ্ট হয়ে লাখ লাখ টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
গত ২-৩ বছরে পটুয়াখালী-গলাচিপা, পটুয়াখালী-বাউফল ও দশমিনা আন্তঃউপজেলা সড়কে চারজনসহ আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত পথচারী। প্রিয়জন বা পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারীকে হারিয়ে অনেকেরই মানবেতর দিন কাটছে। কেউ কেউ সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে বেঁচে আছেন। এত কিছুর পরেও গত দুই বছর ধরে স্থানীয় বন বিভাগ মরা গাছ অপসারণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এতে ক্ষোভ জানিয়ে দ্রুত মরা গাছ অপসারণের দাবি জানান স্থানীয় গাড়ি চালকরা।
স্থানীয় মোটরসাইকেল চালকরা জানান, দৈনিক মোটরসাইকেল ভাড়া চালিয়ে উপার্জিত আয় দিয়ে কোনো রকম সংসার চালাই। আর সড়কে যদি কোনো দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গুরুতর আহত হই, তাহলে আমাদের ছয় মাস থেকে এক বছর ঘরে থাকা লাগে। ফলে আমাদের পরিবার তখন প্রায় নিঃস্ব হয়ে যায়। সড়কে দুর্ঘটনায় আমাদের অনেকে নিহতও হয়েছেন। তাদের পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে জানান, পটুয়াখালী হরিদেবপুর গলাচিপা সড়কে ৬০-৭০ ভাগ গাছই মরা। মানুষ হাঁটতে গেলেও মরা গাছের ডালপালা ভেঙে মাথায় পড়ে। সব মিলিয়ে পটুয়াখালী আন্তঃউপজেলা ও ইউনিয়নের প্রায় ১০-১২টি সড়কে মরা গাছ আতঙ্ক নিয়ে যাতায়াত করছে প্রায় কয়েক লাখ মানুষ।
পটুয়াখালীতে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা খুবই কম দাবি করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) পটুয়াখালী কার্যালয় সহকারী পরিচালক আব্দুল জালিল মিয়া বলেন, মরা গাছের কারণে নিরাপদ সড়ক অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। আমরা দ্রুত মরা গাছ অপসারণের জন্য বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাংলানিউজকে বলেন, জেলায় ১১টি আন্তঃউপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কের মরা গাছ অপসারণের জন্য জেলা বন ও পরিবেশ কমিটিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই মরা গাছ অপসারণ সম্পন্ন হবে।
এদিকে কারণে-অকারণে যাতে সড়কে কোনো প্রাণ না ঝরে, সেদিকে নজর রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়েছে পটুয়াখালীবাসী।
বাংলাদেশ সময়: ২১২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০২২
এসআরএস