ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৬ মে ২০২৪, ০৭ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

আইএমএফের ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সরকার

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
আইএমএফের ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী সরকার

ঢাকা: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিকেলে আইএমএফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আমরা আশাবাদী। আজ ছিল প্রথম মিটিং। মিটিং শুরু হয়েছে, সামনে আরও আলোচনা চলবে।

বুধবার আইএমএফের প্রতিনিধিদল ১৫ দিনের সফরে ঢাকায় আসে। আইএমএফ মিশনের প্রধান রাহুল আনন্দ এই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। আগামী ৯ নভেম্বর পর্যন্ত আইএমএফের প্রতিনিধিদল ঢাকায় অবস্থান করবে। এ সময়ে তারা বাংলাদেশের জন্য আগামীর ঋণ কর্মসূচি এবং নতুন করে দীর্ঘমেয়াদে ঋণ দিতে আর্থিক খাতের সংস্কার ও নীতি নিয়ে আলোচনা করবে বলে জানা গেছে। প্রতিনিধিদলটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারক এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করবে।

জানা গেছে, অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরে গত জুলাইয়ে লেনদেনের ভারসাম্য বজায় রাখা ও বাজেট সহায়তার জন্য আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চেয়ে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। এ ঋণের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যালেন্স অব পেমেন্ট ও বাজেট সহায়তার জন্য ১৫০ কোটি করে ৩০০ কোটি ডলার চাওয়া হয়। বাকি ১৫০ কোটি ডলার চাওয়া হয়েছে আইএমএফের নতুন উদ্যোগ, সহনশীলতা ও টেকসই সহায়তা তহবিল (ট্রাস্ট) থেকে।

ঋণ দিতে আইএমএফ বেশকিছু সংস্কার কার্যক্রমের সুপারিশ করেছে। আইএমএফ যেসব সংস্কার কার্যক্রমকে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছে সেগুলো হলো—করপোরেট সুশাসন আরও বলিষ্ঠ করা, বর্তমান অবকাঠামোর ওপর তদারকি আরও কঠোর করা ও এর প্রয়োগ নিশ্চিত করা, ঋণদাতাদের অধিকার প্রয়োগের জন্য আরও বলিষ্ঠ সহযোগিতা ও ঋণগ্রহীতাদের ঋণ পরিশোধের জন্য প্রণোদনা নিশ্চিতের জন্য আইনি ব্যবস্থার যথোপযুক্ত সংস্কার।

এছাড়া রাজস্ব বাড়াতে আইএমএফ ভ্যাট অবকাঠামোর সরলীকরণ, রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন ও বড় করদাতাদের কাছ থেকে ঠিকমতো কর আদায় করতে না পারার ঝুঁকি কমানোর ব্যবস্থাপনার মতো লক্ষ্য নির্ধারণের সুপারিশও করেছে। ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু সুপারিশ করে আইএমএফ বলেছে, ব্যাংক খাতে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সমস্যা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে এ সমস্যা অনেকটাই প্রকট।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে গত ১৬ অক্টোবর আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তখন তিনি জানান, আইএমএফ মৌখিকভাবে ঋণ দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে ঋণ দিতে বাংলাদেশকে নানামুখী শর্তও দেবে আইএমএফ। আইএমএফ চায় বাংলাদেশের রাজস্ব প্রশাসনের আধুনিকায়ন হোক। রাজস্ব সংগ্রহ কার্যক্রম গতিশীল হোক। মোট দেশজ উৎপাদননের (জিডিপি) তুলনায় রাজস্ব সংগ্রহের অনুপাত কম। দীর্ঘদিন ধরে তা ৭ দশমিক ৬ শতাংশে আটকে আছে। এ হার দক্ষিণ এশিয়ায় মধ্যে সর্বনিম্ন। এছাড়া ব্যাংক খাতে বর্তমানে রয়েছে উচ্চমাত্রার খেলাপি ঋণ। আইএমএফ চায়, এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরুক। প্রাতিষ্ঠানিক (করপোরেট) সুশাসন বলিষ্ঠ হোক।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
জিসিজি/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।