ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২১ ভাদ্র ১৪৩১, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দীর্ঘ বিরোধের বলি পিরোজপুরের ইউপি সদস্য

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৫, ২০২২
দীর্ঘ বিরোধের বলি পিরোজপুরের ইউপি সদস্য গ্রেফতার সিদ্দিকুর

ঢাকা: পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মামুন হাওলাদারকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি গাজী সিদ্দিকুর রহমানকে (৫৫) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৩। শুক্রবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

র‌্যাব জানায়, নিহত ইউপি সদস্য মামুনের সঙ্গে গ্রেফতার সিদ্দিকুর, তার ভাই কামাল ও ভাতিজা আসাদুলের দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। বিভিন্ন সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডাও হয়। শত্রুতার জেরে সিদ্দিকুরের নেতৃত্বে মামুনকে খুন করা হয়।

শনিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

ঘটনার বিবরণে তিনি জানান, গত ৩১ অক্টোবর সকালে ইউপি সদস্য মামুন হাওলাদারকে কুপিয়ে বাম পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে, শরীর ও মুখমণ্ডল ক্ষত-বিক্ষত করে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এ ঘটনায় সিদ্দিকুর রহমানকে প্রধান আসামি করে আরও ১০ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে ভান্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারির প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে সিদ্দিকুরকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে খন্দকার আল মঈন বলেন, ভিকটিম মামুন হাওলাদার একজন ব্যবসায়ী এবং শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বর্তমান ইউপি সদস্য। তার সঙ্গে গ্রেফতার সিদ্দিকুর, তার ভাই কামাল ও ভাতিজা আসাদুলের দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছিল। ২০১১ সালে মামুনের আত্মীয় এক নারীকে ধর্ষণের দায়ে সিদ্দিকুরের ভাই কামাল ও ভাতিজা আসাদুল গ্রেফতার হয়।

এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে তারা মামুনের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের পরিকল্পনা শুরু করে। এছাড়াও বিভিন্ন সময় এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শত্রুতার জেরে মামুনকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, গত ৩১ অক্টোবর সকালে পরিকল্পনা অনুযায়ী সজল জমাদ্দার ভিকটিম মামুনকে ইউনিয়ন পরিষদে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তার মোটরসাইকেলে তোলেন এবং সিদ্দিকুরকে জানান। নির্ধারিত জায়গায় পৌঁছালে সিদ্দিকুরের নির্দেশে কামাল, আসাদুল এবং অন্যরা রাস্তায় গাছ ফেলে গতিরোধ করে মামুনের ওপর হামলা চালান।

এ সময় পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মোটরসাইকেল চালক সজলকে পিটিয়ে আহত করা হয়, যাতে তাকে কেউ সন্দেহ না করে। এরমধ্যে মামুনের মৃত্য নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান জড়িতরা।

কমান্ডার মঈন বলেন, গ্রেফতার সিদ্দিকুর ঘটনার পরপরই পালিয়ে প্রথমে পিরোজপুর এবং পরে ঢাকার ফকিরাপুল এলাকায় আত্মগোপন করেন। এরপর তিনি অবস্থান পরিবর্তন করে নারায়ণগঞ্জ সদর এলাকায় আত্মগোপন করেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, ধর্ষণ, ডাকাতি এবং অস্ত্র মামলাসহ প্রায় ১০টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তিনি একাধিকবার কারাভোগ করেছেন বলেও প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০২২
পিএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।