ঢাকা, বুধবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩১, ১৫ মে ২০২৪, ০৬ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

সিংড়ায় নকল স্বর্ণের মূর্তি বিক্রি প্রতারক চক্রের ৭ সদস্য আটক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
সিংড়ায় নকল স্বর্ণের মূর্তি বিক্রি প্রতারক চক্রের ৭ সদস্য আটক

নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় নকল স্বর্ণের মূর্তি দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৭ সদস্যকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব-৫)। সেই সঙ্গে তাদের কাছে থেকে একটি নকল স্বর্নের মূর্তি জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার (২১ নভেম্বর) সকালে র‌্যাবের দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে রোববার (২০ নভেম্বর) দিনগত রাত পৌনে ৯টার দিকে সিংড়া উপজেলার পিপলসন গ্রামস্থ দড়িপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদের আটক করা হয়। এতে নেতৃত্ব দেন র‌্যাব-৫, নাটোর ক্যাম্প কোম্পানি অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন ও কোম্পানি উপ-অধিনায়ক সহকারী পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম।

আটকরা হলেন- সিংড়া উপজেলার পিপলসন (দড়িপাড়া) এলাকার মৃত ফয়েজ উদ্দিন প্রমানিকের ছেলে মো. মন্টু (৪০), মো. মুকুল (৪৪) ও মো. শফিকুল  (৩০), একই গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলী (৪০), মৃত সেকেন্দার প্রামানিকের ছেলে মো. জাহিদুল ইসলাম (৫৫), মৃত ছহির উদ্দিনের ছেলে মো. রজিম আহম্মেদ (২২) ও বগুড়ার শেরপুর উপজেলার লাঙ্গল মোড়া গ্রামের মৃত আবু বক্করের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন (৩৮)।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জেলার লালপুর উপজেলার সালামপুর গ্রামের জনৈক তরিকুল ইসলামের অভিযোগের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা ওই অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তাদের আটকসহ নকল স্বর্ণের মুর্তি জব্দ করা হয়।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, চলতি বছরের মার্চ মাসে রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলার শাহদোলা মাজার জিয়ারতের সময় আটকদের মধ্যে একজনের সঙ্গে পরিচয় হয় তরিকুল ইসলামের। তখন তাদের মধ্যে মোবাইল নম্বর আদান প্রদান হয়।

পরে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে ওই বন্ধু তরিকুলকে ফোন দিয়ে জানান যে তার এক আত্নীয় পুকুর খনন করতে গিয়ে একটি স্বর্ণের পুতুল পেয়েছেন এবং সেটি অল্প দামে বিক্রি করবেন। ওই কথা মতো সিংড়ার পিপলসন দড়িপাড়া এলাকায় যান তরিকুল ইসলাম। সেখানে ওই পুতুলটি দেখালে প্রথমে তার সন্দেহ হয়। পরে বিশ্বাসযোগী করার জন্য তারা পুতুলের ডান হাতের সামান্য অংশ কেটে দিয়ে বাড়িতে গিয়ে পরীক্ষা করতে বলেন।

এ অবস্থায় তাদের কথামত সামান্য কাটা অংশ স্বর্ণকারের দোকানে পরীক্ষা করিয়ে স্বর্ণের বিষয়টি নিশ্চিত হন। পরে গত ১৭ অক্টোবর দুপুরে ২ লাখ ২০ হাজার টাকায় ওই পুতুলটি কিনে স্বর্ণকারের দোকানে গিয়ে পরীক্ষা করান তরিকুল ইসলাম। তাতে স্বর্ণের কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায় না।

এরপর রোববার তাদের কাছে পুতুলটি দিয়ে টাকা ফেরৎ চান। এতে তারা গড়িমসি করেন এবং তরিকুলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ অবস্থায় সেখান থেকে পালিয়ে জামতলী বাজারে এসে র‌্যাবের টহল দলকে দেখতে পেয়ে তিনি বিষয়টি জানান।

পরে র‌্যাবের একটি আভিযানিক দল রাতে অভিযান পরিচালনা করে নকল স্বর্ণের মূর্তি বিক্রির সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সাত সদস্যকে আটক ও নকল স্বর্ণের মূর্তিটি জব্দ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, আটকরা প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন যে তারা সবাই একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজনকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে সোনালী রংয়ের পুতুলকে স্বর্নের বলে বিশ্বাস করাতেন। এভাবে তারা প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন। এ ব্যাপারে তরিকুল ইসলাম বাদি হয়ে সিংড়া থানায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২২
এফআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।