ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

পোশাকশিল্পকে সহযোগিতার আশ্বাস কংগ্রেসওম্যানের

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৪
পোশাকশিল্পকে সহযোগিতার আশ্বাস কংগ্রেসওম্যানের

ঢাকা: বাংলাদেশের পোশাকশিল্পকে সাধ্যমতো সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং। এজন্য তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি বৃহৎ গার্মেন্ট হাউজকে চিঠিও দিয়েছেন।

এছাড়াও গ্রেস মেং ট্যারিফ রেট নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলারও আশ্বাস দেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ. কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে মার্কিন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এই আশ্বাস দেন। গ্রেস মেং বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতি ও  সাফল্যের প্রশংসা করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের গার্মেন্ট কারখানার নিরাপদ ও নিরাপত্তার বিষয়ে এবং শ্রমিকদের বেতন কাঠামো পরিবর্তনে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত কার্যক্রমের প্রশংসা করেন।

এ সময় সেখানে বাংলাদেশ দূতাবাস ওয়াশিংটনের শার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত উপস্থিত ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে গ্রেস মেং স্থায়ী প্রতিনিধির কাছে জানতে চান কতটি মার্কিন গার্মেন্ট/বায়ার বাংলাদেশের গার্মেন্টের অবস্থার উন্নতির জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কারণ এ ব্যাপারে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহৎ ১৫টি গার্মেন্ট হাউজকে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারক ও নির্মাতাদের যাবতীয় সহযোগিতার জন্য যৌথ চিঠি লিখেছেন।

দুটি দেশের মধ্যে ব্যবসা, বিনিয়োগ, ভ্রমণ এবং যোগাযোগ ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব যেন আরো সুদৃঢ় হয় সেলক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান মার্কিন কংগ্রেসওম্যান।

স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোমেন গ্রেস এ সময় মেংকে বলেন, বাংলাদেশ একসময় ছিল তলাবিহীন ঝুড়ি ;কিন্তু আজ তা পরিবর্তিত হয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশ্বের মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে । দেশটি দারিদ্র্যসীমা অর্ধেকেরও নীচে নামিয়ে এনেছে। দেশটি মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অর্জনের পথে রয়েছে।
বিগত পাঁচ বছরে যেখানে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল শতকরা ০.৫ থেকে ১.৫, সেখানে বাংলাদেশ সব সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার শতকরা ৬-এ রাখতে সক্ষম হয়েছে। এটা হচ্ছে স্পন্দনশীল অর্থনীতি এবং মার্কিন বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে দেশে-বিদেশে অধিকতর চাকরি তৈরি করতে পারত।

ড. মোমেন বলেন, ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশে আমদানি বেড়েছে প্রায় ৪২ ভাগ কিন্তু সে তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে মাত্র ৯ ভাগ। বাংলাদেশ এলডিসিভুক্ত দেশ হওয়া সত্ত্বেও রপ্তানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে ১৬ ভাগ থেকে ৩২ ভাগ পর্যন্ত শুল্ককর দিতে হয়। যেখানে উন্নত দেশ মাত্র ০.৫ থেকে ২ ভাগ অথবা বিনা শুল্কে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করে। ‘যুক্তরাষ্ট্র গরিবের বন্ধু’ বলে পরিচিত কিন্তু এক্ষেত্রে তার ব্যত্যয় লক্ষণীয়।

এ প্রসঙ্গে গ্রেস মেং স্থায়ী প্রতিনিধিকে আস্বস্ত করে বলেন, টেরিফ রেট নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবেন। বিশেষ করে তৈরি পোশাকসহ বাংলাদেশি পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে কেন ১৬ ভাগ হারে শুল্ককর দিতে হচ্ছে সেটি তিনি খতিয়ে দেখবেন এবং সমাধানের পথ খুঁজে বের করবেন।

বৈঠকে ড. মোমেন আরো বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিকারভাবে বাংলাদেশের গরিব নারীদের সহায়তা করতে চায় তবে উচিত হবে বিনাশুল্কে পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেওয়া। অন্ততপক্ষে ২/৩ বছরের জন্য হলেও এ সুযোগ পেলে বাংলাদেশি গার্মেন্ট মালিকেরা শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র আরো বেশি নিরাপদ করতে ও নিরাপত্তা দিতে পারতো।

তিনি বলেন, নব্বই দশকে শিশুশ্রম বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ একটি আদর্শ ব্যবস্থা গ্রহণ করে যার ফলে শিশুশ্রম দূর হয় এবং তাদের পরিবারকে রাস্তায় অমানবিক জীবন পালন করতে হয়নি। বর্তমানে তৈরি পোশাক কারখানার নিরাপত্তার বিষয়টি এবং যাতে শিল্পশ্রমিক চাকরি না হারায় সে ব্যাপারে একটি মানবিক সমাধান প্রয়োজন।

কংগ্রেসওম্যান বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ.কে আব্দুল মোমেনকে আশ্বস্ত করে বলেন বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে তাদের এ ধরনের বৈঠক অব্যাহত থাকবে।

এ সময় স্থায়ী প্রতিনিধি গ্রেস মেং-কে বাংলাদেশ ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানালে তিনি তা গ্রহণ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৩ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ