ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নিউইয়র্ক

নিউইয়র্ক থেকে মাহমুদ মেনন ও শিহাবউদ্দীন কিসলু

জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততা শুরু মঙ্গলবার

মাহমুদ মেনন ও শিহাবুদ্দীন কিসলু | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৪
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ততা শুরু মঙ্গলবার ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নিউইয়র্ক থেকে: বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমগুলোর দৃষ্টি এখন জাতিসংঘের দিকে। সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে গিয়ে দেখা গেলো সাংবাদিকদের প্রস্তুতি চলছে।

জাতিসংঘ  সদর দপ্তরের সামনে মিডিয়া অ্যাক্রেডিটেশন ও লিয়াঁজো ইউনিট (মালু)র কর্মকর্তা আর কর্মীরা ভীষণ ব্যস্ততায় সময় কাটাচ্ছেন। তাদের কাছ থেকে অ্যাক্রেডিটেশন নিতে শত শত সাংবাদিক লাইনে দাঁড়িয়ে।

মূল ইউনিট থেকে সেবা দিয়ে কুলানো যাচ্ছে না বলে জাতিসংঘ সদর দফতরের মূল ভেন্যুর মিডিয়া সেন্টারের পাশেও বসেছে মালুর একটি ইউনিট। সেখান থেকে আগেই মেইলে পাঠানো অ্যাপ্রুভালের কপি, সাংবাদিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের লেটার অব অ্যাসাইনমেন্ট আর পাসপোর্ট ও সাংবাদিকতার পরিচয়পত্র দেখে যাচাই করেই ইস্যু করা হচ্ছে অ্যাক্রেডিটেশন।

এবারের জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের পাশাপাশি রয়েছে জলবায়ূ সম্মেলন। জাতিসংঘ মহাসচিবের ডাকে এই সম্মেলন হবে ২৩ সেপ্টেম্বর। আর সে কারণেই এবার সংবাদ মাধ্যমগুলোর আগ্রহ অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি বলে জানালেন মালুর একজন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বরের জলবায়ূ সম্মেলন নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে একটু বাড়তি আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতারা ছাড়াও জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন এই সম্মেলনে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই জলবায়ূ সম্মেলনে বিগ ভয়েস হিসেবে বিশ্বের জলবায়ূ পরিবর্তন এবং তার মোকাবেলায় বিশ্ব নেতৃত্বের করণীয় তুলে ধরবেন।

বাংলাদেশের জলবায়ূ পরিবর্তন মোকাবেলায় তার সরকার এরই মধ্যে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাও তুলে ধরবেন শেখ হাসিনা।

মালুর অ্যাক্রেডিটেশন করতে আসা সাংবাদিকদের মধ্যে সুইডিশ টেলিভিশনের একজন সাংবাদিক বাংলানিউজকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের যে ভয়াবহ পরিণতি হতে যাচ্ছে তা তারা জানেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক্ষেত্রে ‘ভয়েস রেইজ’ করা হবে জেনেও সে ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন এই নারী সাংবাদিক।

কিউতেই কথা হয় মিয়ামি থেকে সেখানকার স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিকের সঙ্গেও। তিনি বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তনের ভয়াবহ পরিণতি এখন যুক্তরাষ্ট্রও ভোগ করছে। স্যান্ডি, ক্যাটরিনার মতো ভয়াবহ ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখেছে এই দেশ। সমুদ্রের পানির লেভেল বেড়ে গেলে কেবল যে বাংলাদেশের অনেক স্থান পানির নিচে তলিয়ে যাবে তা-ই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিও একই ধরনের হুমকির মুখে রয়েছে।

এর পরেও যুক্তরাষ্ট্র কেন গ্রিন হাউস গ্যাস কমিয়ে আনার পক্ষে প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই করছে না? --এমন প্রশ্নে ওই সাংবাদিক বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তনের ভয়াবহ পরিণতি যুক্তরাষ্ট্র দেখতে শুরু করেছে। এই চুক্তিতে সই করতে যুক্তরাষ্ট্র বাধ্যই হবে। তবে এরই মধ্যে তার দেশ গ্রিন হাউস গ্যাস উৎপাদনের মাত্রা কমাচ্ছে বলে জানালেন মায়ামি থেকে আসা এই সাংবাদিক।

বাংলাদেশে জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে সুন্দরবন ধ্বংস হচ্ছে মর্মে  দুঃখ প্রকাশ করলেন জার্মানি থেকে আসা একজন সাংবাদিক। রয়েল বেঙ্গল টাইগারের কথা অনেক শুনিয়ে এই নারী সাংবাদিক বলেন, সুন্দরবন বাংলাদেশকে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই ম্যাংগ্রোভ বনকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে বলেও মত দেন তিনি।

জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দেওয়ার মধ্য দিয়েই জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যস্ততার দিন শুরু।

সকাল ৮টায় শুরু হবে এই সম্মেলনের উদ্বোধনী। তাতে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ইন্টার গভর্নমেন্টাল প্যানেল-এর সভাপতির বক্তব্য শুনবেন। পরে একবার হোটেলকক্ষে ফিরে সাড়ে ১০টায় আবার অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। সেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে ‘জাতিসমূহের কর্ম পরিকল্পনা ও অভিপ্রায় ঘোষণা’ পর্বে বক্তব্য রাখবেন।

জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্বের অনেক ছোট-বড় দেশ এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন। তারা চায়, বাংলাদেশ জোড়ালো ভূমিকা রাখুক এক্ষেত্রে।

এই সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে নিজেদের প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবেলায় কি করেছে তা তুলে ধরবেন। আর বিশ্ব নেতৃবৃন্দের কাছে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর আহ্বান জানাবেন বলেই জানান ড. মোমেন।

নরওয়ের সঙ্গে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের বাণিজ্য বিষয়ে জোর দেবেন বলে জানান তিনি।   এছাড়া জলবায়ূ পরির্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে নরওয়ে কিভাবে দাঁড়াতে পারে সে নিয়েও দুই সরকার প্রধানের কথা হবে, বলেন ড. মোমেন।

এই দিনই সকাল সাড়ে ১১টায় নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী মিজ এরনা সলবার্গ এর সাথে দ্বি-পাক্ষিক বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ সদরদফতরে  দ্বিপাক্ষিক কক্ষে এই বৈঠক হবে। সন্ধ্যা ৭টায় ওয়ার্ল্ডফ এস্টোরিয়া হোটেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামার দেওয়া অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী।


** বিএনপির বিক্ষোভ, প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে আ’লীগের সমাবেশ
** নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
** জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী


বাংলাদেশ সময় ২১৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

নিউইয়র্ক এর সর্বশেষ