নিউইয়র্ক: সারা আমেরিকা জুড়ে এখন নতুন আতঙ্কের নাম ‘ইবোলা। ’ প্রাণঘাতি এ ভাইরাসের কোন ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক এখনো নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বন্দরে ইবোলা মোকাবেলায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। শনিবার থেকে নিউইযর্কের জন এফ কেনেডি বিমান বন্দর যাত্রীদেরকে ‘ইবোলা‘ ভাইরাস স্ক্রিনিং শুরু করেছে।
গত বুধবার ৮ অক্টোবর ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ব্যক্তি থমাস ডানকেনের মৃত্যুর পরই যুক্তরাষ্ট্রে বিমান বন্দরগুলোতে ‘ইবোলা’ ভাইরাস স্ক্রিনিংয়ের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল। তবে থমাস ডানকেনের জ্বর বা অন্য কোন ইবোলা উপসর্গই তখন কিছুই ছিলনা। লাইবেরিয়া থেকে ডালাসে ফেরার দুসপ্তাহ পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ইবোলা ভাইরাসেই গত বুধবার মৃত্যু হয় তার।
নিউইয়র্কের কেনেডি বিমান বন্দরই হলো ইবোলা স্ক্রিনিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ৫টি বিমান বন্দরের প্রথমটি।
শনিবার জন এফ কেনেডি বিমান বন্দরে ইবোলা স্ক্রিনিং সূচনায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাষ্টমস ও বর্ডার প্রটেকশন কমিশনার জিল কারলিকাউসকি জানিয়েছেন, নিউইয়কের্র বেলভিউ হাসাপাতালে সন্দেহভাজন ইবোলা আক্রান্ত যাত্রীদের চিকিৎসায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেখানে যাত্রীদেরকে সম্পূর্ণ আইসোলোটেড বা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রাখা হবে। ৪ থেকে সর্বোচ্চ ৬ ঘন্টার মধ্যে এখানে রক্ত পরীক্ষার ফলাফলে রোগটিতে আক্রান্ত কি না তা নিশ্চিত করা হবে।
গত দুই মাসে আফ্রিকায় প্রায় ৩৬ হাজার যাত্রীকে ইবোলা স্ক্রিনিং করা হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৭৭ জনকে বিমান ভ্রমনে বাধা দেওয়া হয়েছে, যার বেশীর ভাগই ছিল ম্যালেরিয়া জ্বর আক্রান্ত।
আগামী সপ্তাহের শুরু থেকেই ওয়াশিংটন ডালেস বিমান বন্দর, নিউজার্সির নিউয়ার্ক , শিকাগো’র ও’ হ্যারে এবং আটলান্টা অন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ইবোলা স্ক্রিনিং শুরু হচ্ছে।
লাইবেরিয়া, সিরিয়োলিওন এবং গিনি থেকে প্রতিদিন প্রায় ১শ ৫০ জন বিভিন্ন বিমান বন্দর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করছে। পাসপোর্টের তথ্য ধরে বিশেষ করে এই তিনটি দেশের প্রত্যেককেই ইবোলা স্ক্রিনিংয়ের আওতায় নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বিমান বন্দর কর্তপক্ষ।
এছাড়া বিভিন্ন ট্রানজিট পয়েন্ট থেকে যাত্রীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের বিষয়টিও এখন কর্তৃপক্ষের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, যতক্ষণ পর্যন্ত রোগাক্রান্ত নয় এমনটা নিশ্চিত হওয়া যাবে ততক্ষণ পর্যন্ত যাত্রীদেরকে স্ক্রিনিং করতেই হবে। অর্থাৎ একটা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত স্ক্রিনিং চলবেই।
ইবোলা মূলত বায়ু বাহিত রোগ নয়, বরং শারীরের তরল পদার্থে এ ভাইরাস সংক্রমিত হয়। কেবলমাত্র যখনর কেউ এর উপসর্গগুলো বহন করে, তখনই ভাইরাস সংক্রমিত হয়।
এদিকে হোয়াইট হাউস থেকেও প্রেসিডেন্ট ওবামা ইবোলা মোকাবেলায় সবশক্তি নিয়োগে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে ইবোলা মোকাবেলায় তহবিল ছাড় দেওয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর , ইউএস এআইডিসহ বিভিন্ন সংস্থা ইতোমধ্যেই এই ভাইরাস মোকাবেলায় নির্ঘুম কাটাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময় ১৫৪৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৪