‘ভালো আছি ভালো থেকো
আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’
চিঠির দিন প্রায় শেষ হতে বসেছে। তবু লোকে এখনও চিঠি লেখে।
সেটা না হয় ঠিকই আছে। কিন্তু চিঠিতে যদি প্রেরক-প্রাপকের কোনো ঠিকানা না দেন বা দিতে ভুলে যান, তখন? ঠিকানাহীন চিঠি লিখলে তাকেই বা কী বলা যায়? রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর লেখা গানের ভাষায় তাকে ‘আকাশের ঠিকানায় চিঠি’ লেখা বলাই যায়। কিন্তু ‘আকাশের ঠিকানায় চিঠি’ কেউ লিখলে, সে চিঠি কী করে প্রাপকের হাতে পৌঁছাবেন পোস্টম্যান? সে অসম্ভবকেই সম্ভব করেছেন এক আইরিশ পোস্টম্যান।
খামের উপর ঠিকানার বদলে প্রেরক একটা ম্যাপ এঁকে দিয়েছিলেন কেবল। কারণ প্রাপকের নামটা তিনি কোনোভাবেই মনে করতে পারছিলেন না। কিন্তু ওই ব্যক্তির প্রতি প্রেরকের আবেগের টান এতো বেশি ছিলো যে, নাম ভুলে যাওয়ার পরও চিঠি তিনি ঠিকই লিখলেন। যে ম্যাপটা তিনি খামের গায়ের উপর এঁকে দিয়েছিলেন তাতে একটা বাতিঘরের অবস্থান চিহ্নিত করা ছিলো। সেখানটায় টিক চিহ্ন দিয়ে লেখা ছিলো ‘এখানটায় প্লিজ’ (“Here please”)।
আয়ারল্যান্ডের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের প্রত্যন্ত হুক উপদ্বীপে রয়েছে এমন এক বাতিঘর। পোস্টম্যান ভদ্রলোক এমন অভিনব চিঠিকে পাগলের পাগলামি ঠাউরে সেটি ময়লার ঝুড়িতে ফেলে দেননি। বরং তিনি চিঠিটার প্রাপকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পণই করলেন। সে পণ রক্ষাও করলেন। অনেক খোঁজাখুঁজি করে তিনি ঠিকই বের করলেন চিঠির প্রাপককে।
তার হাতে তুলে দিলেন ‘আকাশের ঠিকানায়’ লেখা সেই চিঠি। প্রেরকের নাম রেড ডেইভ বলে জানা গেলেও প্রাপকের নামটি জানায়নি সংবাদমাধ্যম। রেড ডেভ তার চিঠির এক জায়গায় হুক লাইটহাউসের প্রশংসা করতে গিয়ে লিখেছেন: ---“a little note to say how much he liked the Hook Lighthouse”.
পত্রিকায় খবরটির শিরোনাম হয়েছে: ‘Irish postman delivers letter with hand-drawn map and no address’
আর হ্যাঁ, পোস্টম্যানের নাম না জানা গেলেও তিনি এখন রীতিমতো সেলিব্রেটি!
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৬
জেএম/এএ