ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

সুপার মাছি নিয়ে অহেতুক ভয় নয়!

অফবিট ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৬
সুপার মাছি নিয়ে অহেতুক ভয় নয়!

মাছি আবার সুপার প্রজাতির! বিষয়টি সত্যি ভাববার। ব্রিটিশ অনলাইন সংবাদমাধ্যমগুলো আবার এক কাঠি সরেশ! সুপার প্রজাতির এ মাছিকে তারা বলছে ‘দৈত্যাকার ও আক্রমণাত্মক’।

যা তৈরি করেছে অপ্রয়োজনীয় ভয়।

মিরর বলেছে, ‘এগুলো দানবের মতো এবং এ পর্যন্ত পাওয়া স্বাভাবিক মাছিগুলোর চেয়ে বড়’। আর এক্সপ্রেসের মতে, ‘তারা বড় পুরুষাঙ্গ নিয়ে যেন মানবদস্যুতে পরিবর্তিত হয়েছে, তেমন সেটি বিষাক্ত।
 
আর্থ্রোপোডজাত (পোকামাকড়, মাকড়সা ও তাদের সমগোত্রীয়) রোগ-বালাই প্রায়ই সংবাদপত্রের শিরোনাম হয়। মাসখানেক আগেই ‘দৈত্যাকার মানুষখেকো মাকড়সা ব্রিটিশ বেডরুমে আক্রমণ করছে’ বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। অথচ মাকড়সা নিরীহই নয়, উপকারীও। কারণ, তারা অন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় খায়।

এ ধরনের শিরোনাম তাই ভয় এবং আর্থ্রোপোডের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করে। এ ভয় অপ্রয়োজনীয় ও পরিহারযোগ্যও।
 
২০১১ সালে ডাক্তাররা একটি অসাধারণ পরীক্ষা করে দেখিয়েছেন, পোকা-মাকড়ের এই ভয় সহজাত ও এটি সম্ভবত সাংস্কৃতিক শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে চলতেই থাকে। সুতরাং, আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ছারপোকা নিয়ে জুজুর ভয় না দেখাই, তাহলে তারা সন্ত্রস্ত হয়ে উঠবে না। সমগ্র বিশ্বকে তাদের কাছে অসাধারণ মনে হবে।

কিছু মাছি রক্ত দূষিত করে বিউবোনিক প্লেগসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রোগের জন্য দায়ী, এটি সত্য। কিন্তু আমরা তো শত শত বছর ধরে মাছিকে মোকাবেলা করে বেঁচে আছি। সতর্কতা তাই বিচক্ষণতা, কিন্তু অন্ধ আতঙ্কের নয়।
মাছি ‘আক্রমণাত্মক’ হয় না। উত্তর মেরু অঞ্চল ছাড়া সর্বত্র তাদের পাওয়া যায়। তারা স্যাঁতসেঁতে ও আর্দ্র অবস্থায় বিস্তার লাভ করে, কিন্তু প্রায় ১৩ সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নিচের বিকশিত হতে পারে না। অর্থাৎ, শীতকালে সাধারণত তাদের কার্যকলাপ বন্ধ হয়ে যায়।

কিন্তু এ সুপার মাছি সম্পর্কে সব অতিরিক্ত মনোযোগের কারণ কি?

গ্রীষ্মকালে ও হালকা শীতে মাছি প্রজননের জন্য ভালো অবস্থায় থাকে। সায়েন্স ফিকশন ম্যাগাজিন ‘পলিফেরাটিং’ ছাড়াও কিছু দাতব্য ও পশুচিকিৎসা সম্পর্কিত সংগঠন এক্ষেত্রে অতিরঞ্জিত প্রতিবেদন করেছে। আর তাই আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়েছে ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলোও।

ব্রিটিশ কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ অ্যাসোসিয়েশনের নাটালি বানগে বলেন, অবশ্যই মাছি সংক্রান্ত প্রতিবেদন কোনো ব্যতিক্রম নয়। তাদের আকার বা তাদের শব্দ তরঙ্গ আতঙ্কের হতে পারে না।

মাছি অনেক পুরনো কীটনাশক প্রতিরোধীও হতে পারে। এছাড়া কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণও নেই যে, মাছি বা তাদের যৌনাঙ্গ কেন বড় হচ্ছে। এটা যে বিষাক্ত- তাও প্রমাণিত নয়।

তাই মাছি কিছুটা উষ্ণ, আর্দ্র আবহাওয়ায় রোগ সৃষ্টি বা প্রজনন বাড়াতে পারলেও তারা আক্রমণাত্মক হয় না। তাদের দৈত্যাকার পুরুষাঙ্গের সঙ্গেও রোগের সম্পর্ক নেই। ২০১৬ সালের এ সুপার মাছি তার প্রজাতিগুলোর মধ্যে সাধারণভাবে চিত্তাকর্ষক সদস্য বটে, কিন্তু পূর্ববর্তী প্রজাতিগুলোর চেয়ে কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্যগত নয়।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০১৬
এএসআর/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।