ঢাকা, রবিবার, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ মে ২০২৪, ১০ জিলকদ ১৪৪৫

অফবিট

শঙ্করীকরণে জন্ম আমাদেরও!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১৬
শঙ্করীকরণে জন্ম আমাদেরও! ছবি: মানব জাতি

আমাদের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সদের প্রথম পূর্বপুরুষ হলেও হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেন্সিস্‌ বা নিয়ান্ডারথাল এবং ডেনিসোভা হোমিনিন থেকে বিবর্তিত হইনি আমরা। তবে তিন প্রজাতিই অভিন্ন পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে পৃথিবীতে।

আমাদের প্রজাতি আধুনিক মানুষ হোমো স্যাপিয়েন্সদের প্রথম পূর্বপুরুষ হলেও হোমো নিয়ান্ডারথ্যালেন্সিস্‌ বা নিয়ান্ডারথাল এবং ডেনিসোভা হোমিনিন থেকে বিবর্তিত হইনি আমরা। তবে তিন প্রজাতিই অভিন্ন পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে পৃথিবীতে।


গবেষকরা জানান, মানবপ্রজাতি দু’টির সঙ্গে হোমো স্যাপিয়েন্সদের প্রথম দেখা হয়েছিল আফ্রিকা থেকে ইউরোপ-এশিয়া পাড়ি দেওয়ার পর।    
প্রায় পাঁচ লাখ বছর আগে নিয়ানডারথাল ও ডেনিসোভানরা আফ্রিকা ছেড়ে চলে যায়। নিয়ানডারথালরা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে পাড়ি দেয় এবং ডেনিসোভানরা পূর্ব দিকে যায়। প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে তারা যখন এশিয়ার দক্ষিণ উপকূলের দিকে সরে যায় তখন অন্য মানবদের সঙ্গে প্রজনন ঘটে। এদিকে স্যাপিয়েন্সরা ৪৫ থেকে ৫০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা ছেড়ে ওইসব এলাকায় গিয়ে দেখা পায় দুই প্রজাতিরই।

ফলে নিয়ানডারথাল-ডেনিসোভান আমাদের সমসাময়িকও বটে। এবং তাদের নিজেদের মধ্যে ও তাদের সঙ্গে আমাদের পৃথক শঙ্কর প্রজননের ঘটনার অনেকগুলো প্রমাণ পাওয়া গেছে।
ছবি: মানুষের মাথার খুলি

যেমন, আমাদের ডিএনএ’র সম্পূর্ণ প্রোফাইলের জেনেটিক বিশ্লেষণ নির্দেশ করে যে, ইউরোপীয় ও এশীয় নিয়ান্ডারথালদের থেকে তাদের ডিএনএ’র ১ থেকে ৪ শতাংশ লাভ করেছি আমরা। আবার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু লোকের ৬ শতাংশ ডেনিসোভান ডিএনএ পর্যন্ত আছে।

এমনকি আফ্রিকার কিছু আধুনিক মানুষও পূর্বপুরুষ নিয়ান্ডারথালদের জিনোম বহন করছে। কারণ, প্রায় ৩০০০ বছর আগে ইউরোপ ও এশিয়া থেকে নিয়ান্ডারথালদের কিছু জিনের উত্তরাধিকারী হয়ে আফ্রিকা মহাদেশে ফিরে আসে তারা।

তবে নিয়ান্ডারথালদের সঙ্গেই আমাদের প্রজননের ঘটনা বেশি, ডেনিসোভানদের সঙ্গে কম ইন্টারব্রিড হয় আমাদের। অন্যদিকে বিলুপ্ত ওই দুই প্রজাতির মিলন ঘটেছিল অহরহ, যে কারণে তাদের মাঝে প্রায় হুবহু মিল।
ছবি: মানব জাতি

রোমানিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পেস্তেরা কিউ ওয়েসে গুহায় পাওয়া ওয়েসে ২ নামক ৪০ হাজার বছর আগের এক প্রজাতির মানুষের জীবাশ্ম পরীক্ষা করেও জানা গেছে, তারা ছিল স্যাপিয়েন্স-নিয়ান্ডারথাল মিলনের ফসল। ওয়েসেদের ডিএনএ’র ৬ থেকে ৯ শতাংশ ছিল নিয়ান্ডারথালদের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া।


বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের সমগ্র প্রজাতির মধ্যে শঙ্করীকরণের গুণফল হল আমাদের বিবর্তন এবং এ সাফল্যের জন্য আমরা অনেক ঋণী।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী রেবেকা অ্যাকারম্যান বলেন, ‘স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ৭ থেকে ১০ শতাংশই হাইব্রিড। অনেক আগে পরস্পরের সংস্পর্শে আসার বিবেচনায় এটি সাধারণ ঘটনা। আমাদের মাঝেও হাইব্রিড বৈশিষ্ট্যের একটি মিশ্রন আছে’।


‘আমাদের অনেকের ভেতরেই প্রারম্ভিক মানবদের ডিএনএ ভাসমান, যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে বয়ে নিয়ে চলেছি’।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৬
এএসআর

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।