হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীর ছবি দেখিয়ে মানুষের কাছে খোঁজ নিচ্ছেন। কেউ উত্তর দিতে পারছেন না।
গত ১১ জানুয়ারি নিখোঁজ হন মানোহারের স্ত্রী অনিতা দেবী। ঝাড়খন্ডের পূর্ব সিংহভুম জেলায় বাবার বাড়ি থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এ সময়টায় মানোহার নায়েক দিনমজুরের কাজে বাড়ি থেকে দূরে ছিলেন।
মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছিলেন অনিতা দেবী। তিনি হারিয়ে যাওয়ার পর স্থানীয় থানায় স্ত্রীকে ফিরে পেতে মামলা নিবন্ধন করেন মানোহার। তিনি ভেবেছিলেন কর্তৃপক্ষ স্ত্রীকে ফিরে পেতে সাহায্য করবেন। তবে ভাবনার সঙ্গে বাস্তবের মিল পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষের নিশ্চুপতায় আশা ছেড়ে নিজেই সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।
৪৫ বছরের মানোহার নিজের হাতে স্ত্রীর একটি পাসপোর্ট সাইজ ছবি নিয়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি গ্রাম ঘুরছেন। গ্রামের বাসিন্দাদের ছবিটি দেখিয়ে স্ত্রীর খোঁজ নিচ্ছেন। জিজ্ঞাসা করছেন, ‘আপনি কি কখনো এই মহিলাকে দেখেছেন?’ ছবির সঙ্গে স্ত্রীর গড়ন এবং চালচলনের বর্ণনাও দিচ্ছেন তিনি। তবে বারবারই উত্তর হিসেবে ‘না’ শোনাচ্ছেন মানুষ। হতাশ হয়ে আবারো শার্টের পকেটে ছবিটি নিয়ে সাইকেলে চাপেন স্বামী।
মানোহার বলেন, গত মাসে আমি সাইকেলে যাত্রা শুরু করি। এখন পর্যন্ত ৫৫টি গ্রাম ঘুরেছি। প্রায় ৭৫০ কিলোমিটার পথ পেরিয়েছি। আশা করছি অবশ্যই আমার স্ত্রীকে খুঁজে পাবো। প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ পেরোন তিনি।
১৭ বছর আগে এই দম্পত্তি তাদের সংসার বাঁধেন। তাদের এখন ১৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। মানোহার এখন তার সন্তানকে নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছে। সে তার মাকে দেখার জন্যে উদগ্রীব হয়ে আছেন।
গত মাসে পার্শ্ববর্তী প্রদেশ ওড়িষ্যায় দিনমজুরের কাজ করছিলেন মানোহার। সেখানে থাকতেই অনিতা নিজের বাবার বাড়ি থেকে হারিয়ে গিয়েছে খোঁজ পান তিনি।
২০১৬ সালেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল উত্তর প্রদেশে। একজন ব্যক্তি তার হারিয়ে যাওয়া স্ত্রীকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। অবশেষে ৯ মাস পরে তিনি স্ত্রীকে খুঁজে পেয়েছিলেন। ওই নারী মেরুত শহর থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৮
এমএন/এসএইচ