অথচ সেখানে এখন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে আলো ঝলমলে এক গিটার। প্রথম দেখায় মনে হবে টুং করে বেজে উঠবে এখনি।
যেখানে দিনে-দুপুরেও যেতে ভয় পেতো মানুষ, সেখানে এখন সন্ধ্যা নামারই অপেক্ষা। আঁধার নেমে আসতেই আলোর ঝরনাধারায় স্নাত হয় হোটেলটির গিটার অবয়ব। বর্ণিল আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত হয় চারপাশ। বিভিন্ন রঙের প্রতিফলনে আলোর খেলা চলে গিটারের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে। সেইসঙ্গে আতশবাজির বর্ণিল বিচ্ছুরণ হোটেলের আশেপাশের এলাকাতেও তৈরি করে ভিন্ন আবেশ।
ব্যয়বহুল হোটেল ও ক্যাসিনো সমৃদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের লাস ভেগাসের অনেক ক্যাসিনোর চেয়েও বেশি জাঁকজমকপূর্ণ ফ্লোরিডার এই গিটার আকৃতির হোটেলটি। বিভিন্ন ধরনের প্রায় ১২শ’ রুম রয়েছে এখানে। ক্যাসিনোতে একসঙ্গে সাত হাজার মানুষ বসার আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি রয়েছে তিন হাজার স্লট মেশিন ও টেবিল।
হোটেলটিতে একদিকে আধুনিকতার ছড়াছড়ি অন্যদিকে নিজেদের ঐতিহ্য ফুটিয়ে তুলেছে সেমিনলরা। রয়েছে বাঁশের কুটিরও। হোটেলটির নিজস্ব কৃত্রিম হ্রদ মুগ্ধ করবে সবাইকে। এছাড়াও রয়েছে রাজকীয় সুইমিং পুল ও রেস্টুরেন্ট।
এটি নির্মাণে সেমিনলদের ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর্থিক উন্নয়ন ও নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ক্যাসিনো ব্যবসায় নাম লেখালো সেমিনলরা। মাত্র চার হাজার ২০০ মানুষ নিয়ে তাদের বসতি। হোটেলটির মাধ্যমে শিগগিরই দারিদ্র্য ঘুচে যাবে বলে আশা করছেন তারা।
সেমিনল চেয়ারম্যান মার্সেলাস ওসেলো বলেন, সব সেমিনলরাই হোটেলের আয়ের লভ্যাংশ পাবে।
দেশটির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ফোর্বসের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ক্যাসিনো ব্যবসা ও হোটেল থেকে প্রতিজন সেমিনল বছরে পাবে প্রায় ১ কোটি ৮৪ লাখ ৪ হাজার টাকা।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় যাত্রা শুরু করে সেমিনল হার্ডরক হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনো। স্বাগত অনুষ্ঠানে হলিউডের নামিদামি তারকাদের লাল গালিচা শুভেচ্ছা জানায় হোটেল কর্তৃপক্ষ।
তাদের এ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন জনি ডেপ, কলি কারদেশিয়ান, মরগান ফ্রিম্যান ও সোফিয়া রিচির মতো তারকারা। অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেয় ফ্লোরিডার সম্ভ্রান্ত পরিবারের অনেকেই। অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তে হোটেলের ভেতরে কনসার্ট রুমে শোনা যায় ‘মেরুন ফাইভ’ ব্যান্ডের গিটারের ঝংকার।
বাংলাদেশ সময়: ২২১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
কেএসডি/