শুধু মানুষের ভাষাতেই নয়, বানরের ভাষাতেও এ ধরনের উচ্চারণ ও উপভাষাগত পার্থক্য রয়েছে বলে জানান গবেষকরা।
সুইজারল্যান্ডের জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখেন, মানুষের উপভাষার মতোই বানরের ডাকে অঞ্চলভেদে পার্থক্য রয়েছে।
গবেষণার জন্য দক্ষিণ আমেরিকার মারমোসেটস বানরের ডাক রেকর্ড করা হয়। এ রেকর্ডের মধ্য থেকে তাদের স্থান পরিবর্তনের আগের এবং পরের ডাক আলাদা করে রাখা হয়েছিল। গবেষকরা দেখেন, মারমোসেটস প্রজাতির এ বানরেরা স্থান পরিবর্তনের ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিজেদের ডাককে স্থানীয় উচ্চারণরীতিতে পরিবর্তন করে নিতে পারে।
গবেষণার সঙ্গে জড়িত ড. জুডিথ বুরকার্ট জানান, বানরের ডাকের এ ধরনের পরিবর্তন অনেকটা মানুষের ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারণভঙ্গির মতো। উচ্চৈঃস্বরের কারণে মানুষের কান এ পরিবর্তন ধরতে না পারলেও ধ্বনিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে এলাকাভেদে এ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
অপর গবেষক ইভন জুরশের বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে দেখাতে পারি মারমোসেট প্রজাতির এ বানরেরা সামাজিকভাবেই এ উপভাষা আয়ত্ত করে নেয়। যদি জন্মগতভাবে তাদের উপভাষার মধ্যে পার্থক্য তৈরি হতো, তবে স্থান পরিবর্তনের কারণে তাদের ডাকে কোনো প্রকার পার্থক্য তৈরি হতো না।
তিনি জানান, পরিবেশগত কারণেও এ ভাষাগত পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
গবেষকরা মারমোসেট প্রজাতির ১৬টি বানরের মোট ১০ হাজার ২৬৭টি ডাক রেকর্ড করেন।
উপভাষা বলতে মূলত একই ভাষার মধ্যে অঞ্চলভেদে ভিন্ন ভিন্ন উচ্চারণরীতি ও ভাষিক গঠনকে নির্দেশ করা হয়। অর্থাৎ, অঞ্চলভেদে একই ভাষার মধ্যে ভিন্নতাকে ওই ভাষার উপভাষা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
মারমোসেট প্রজাতির বানর নিজেদের শাবককে দলবদ্ধভাবে একত্রে লালন-পালন করে। দলবদ্ধ জীবনযাপন থেকেই তাদের মধ্যে নিজেদের ভাষাগত দক্ষতা তৈরি হয় বলে ধারণা করছেন গবেষকরা। ড. বুরকার্ট জানান, মারমোসেট শিশুরা মানবশিশুর মতোই অনুকরণের মাধ্যমে ভাষাগত দক্ষতা অর্জন করে।
তবে স্থান পরিবর্তনের কারণে কেনো তারা নিজেদের ভাষায় পরিবর্তন আনে তার সঠিক কোনো কারণ এখনো জানা যায়নি বলে জানান ড. বুরকার্ট।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯
এবি/এএ