ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অফবিট

‘পেঁয়াজ ট্রেন্ডে’ একই পথে বাংলাদেশ-ভারত!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৯, ২০১৯
‘পেঁয়াজ ট্রেন্ডে’ একই পথে বাংলাদেশ-ভারত! তামিলনাড়ুতে এক নবদম্পতিকে পেঁয়াজ উপহার দিয়েছেন বন্ধুরা। ছবি: সংগৃহীত

পেঁয়াজ ইস্যুতে অনেকটা একই পথে হাঁটছে বাংলাদেশ ও ভারত। দুই দেশেই পেঁয়াজের দাম দুইশ’ ছাড়িয়েছে, মন্ত্রী-ব্যবসায়ীরা আশ্বাস দিচ্ছেন কিছুদিনের মধ্যেই কমে যাবে দাম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হট টপিক এখন পেঁয়াজ। আকাশছোঁয়া দাম আর দুষ্প্রাপ্যতার কারণে বড় বড় অনুষ্ঠানে উপহারের তালিকাতেও চলে এসেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিটি।

গত ১৫ নভেম্বর কুমিল্লা সদরে বন্ধুর বৌভাত অনুষ্ঠানে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ উপহার দেন বরের তিন বন্ধু। উপহারের মোড়কে মোড়ানো পেঁয়াজের সেই ছবি আর ভিডিও মুহূর্তেই ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

এই খবর যেতে না যেতেই পরেরদিন একই ঘটনা ঘটে নারায়ণগঞ্জেও।  

এবার সেই একই ঘটনা দেখা গেলো পাশের দেশ ভারতে। সম্প্রতি তামিলনাড়ুর কুড্ডালোরে এক নবদম্পতিকে প্যাকেটভরা পেঁয়াজ উপহার দিয়েছেন বন্ধুরা।

বাংলাদেশের বাজারে এখনো দুইশ’ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালুরুর বাজারেও দুইশ’ ছুঁয়েছে এর দাম।

কুমিল্লায় নতুন বৌয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল পেঁয়াজ উপহার।  ফাইল ফটো

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে ভারত সফরকালে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, দাম বাড়ার পর থেকে তিনি পেঁয়াজ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। এছাড়া জনগণকে পেঁয়াজ কম খেতে বা সাময়িকভাবে খাওয়া বন্ধ করে দিতে পরামর্শ দিয়েছেন একাধিক মন্ত্রীও।

অনেকটা একই ঘটনা ভারতেও। দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংসদে বলেছেন, ‘চিন্তার কিছু নেই। আমি পেঁয়াজ-রসুন খুব একটা খাই না। ’ তার বক্তব্য নিয়ে সংসদের ভেতরে-বাইরে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। বিরোধীদের দাবি, অর্থমন্ত্রী পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টিকে ততটা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।   

বাংলাদেশের মন্ত্রীরা অসংখ্যবার বলেছেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। কিছুদিনের মধ্যেই দাম কমে আসবে। কিন্তু, পারতপক্ষে তাতে কাজের কাজ খুব একটা হয়নি। বরং এক মন্ত্রী যেদিন বলেছেন, পেঁয়াজের দাম কমবে, সেদিনই বাজারে দাম বেড়ে গিয়েছিল ২০-৩০ টাকা।

একই অবস্থা প্রতিবেশীদেরও। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক সব রাজ্যেই পেঁয়াজের দাম চড়া, সরবরাহও কম। তবে এখনো আশার বাণী শুনিয়ে যাচ্ছেন সেখানকার হর্তা-কর্তারা।  

ভারতের ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম বাড়ার জন্য দোষ চাপাচ্ছেন বৃষ্টির ওপর। অসময়ে অতিবৃষ্টিতে পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে দাবি করছেন তারা।

আর বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আর কিছু নাহলেও ঘুরেফিরে বলছেন সেই ভারতের কথাই। ভারত পেঁয়াজ পাঠানো বন্ধ করার কারণেই দাম বেশি। যদিও মিশর, পাকিস্তান, মিয়ানমার থেকে দেশে এসেছে কয়েক হাজার টন পেঁয়াজ। কিন্তু দাম এখনো কমেনি।

খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।  ফাইল ফটো

দাম নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশে খোলা বাজারে ট্রাকে করে ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছে সরকার। একই পথ বেছে নিয়েছে ভারতও। সেখানেও চলছে খোলাবাজারে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি। দরিদ্র মানুষেরা মারামারি-হুড়োহুড়ি করে হলেও পেঁয়াজ কিনছেন লাইন ধরে।

বাজার সামলাতে মিশর, তুরস্ক, মিয়ানমার, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে বাংলাদেশ। পাকিস্তান বাদে ভারতও পেঁয়াজের জন্য ঝুঁকেছে একই দেশগুলোতে।

সবচেয়ে বড় কথা, পেঁয়াজের দাম আবার কবে স্বাভাবিক হবে, তা জানেন না দুই দেশেরই সাধারণ মানুষেরা। একমাত্র আশাই ভরসা সবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।