১৯৯৫ সালের ১৮ নভেম্বর এ চার বোন ও এক ভাই জন্মের পর তাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বাবা প্রেমকুমার তাদের একই ধরনের নাম রাখেন। মালায়লাম ক্যালেন্ডারের উথরাম তারকার নামে তাদের নাম রাখেন, উথরাজা, উথারা, উথামা, উথরা এবং ছেলের নাম রাখেন উথরাজান।
শুধু একই ধরনের নামই নয়, সবসময় এ শিশুদের একই রকম পোশাক, ব্যাগ, ঘড়ি ইত্যাদি ব্যবহার্য বস্তুর ব্যবস্থাও করতেন তিনি। পাশাপাশি একইসঙ্গে স্কুলে যাওয়া-আসা শুরু করে এ পাঁচ ভাই-বোন।
কিন্তু ২০০৪ সালে স্ত্রী রেমা দেবীর অসুস্থতা ও আর্থিক সংকটে দুশ্চিন্তায় আত্মহত্যা করেন প্রেমকুমার। এ ট্র্যাজেডিতে স্থম্ভিত হয় পুরো কেরালা রাজ্য। অনেকেই বিষয়টি খেয়াল না রাখার জন্য অভিযুক্ত করেন সংবাদমাধ্যমকে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পরিবারটিকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন অনেকেই। রেমা দেবীকে সরকারি এক চাকরি দেওয়া হয় এবং অনেক সংবাদমাধ্যম পরিবারটিকে সাহায্যের উদ্যোগ নেয়।
হৃদরোগে অসুস্থ থাকার পরেও রেমা দেবী তার সাধ্য অনুযায়ী সন্তানদের উপযুক্ত শিক্ষার ব্যবস্থা করেছেন। ১৫ বছরের ব্যবধানে আজ উথরাজা ও উথামা অ্যানেসথেসিয়া টেকনিশিয়ান, উথারা সাংবাদিক, উথরা ফ্যাশন ডিজাইনার এবং তাদের ভাই উথরাজান আইটি পেশাদার।
আগামী বছরের ২৬ এপ্রিল কেরালার গুরুভায়ুরের শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরে একসঙ্গে বিয়ের পিড়িতে বসতে যাচ্ছেন চার বোন।
ভারতীয় এক সংবাদপত্রের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে রেমা দেবী জানান, সন্তানদের জন্মের পরপরই তার অনেক আশার মধ্যে একটি আশা এর মাধ্যমে পূরণ হতে চলছে।
তিনি বলেন, স্বামীর হঠাৎ মৃত্যুর পর আমি ছিলাম দিশেহারা। পরে আমি চিন্তা করলাম, সন্তানদের জন্য হলেও আমাকে বেঁচে থাকতে হবে এবং এ চিন্তা থেকে লড়াই শুরু করলাম।
রেমা দেবী জানান, তার স্বামী জীবিত থাকার সময় পাঁচ সন্তানকেই সমানভাবে যত্ন করতেন। স্বামীর স্বপ্ন সফল করার জন্যই তাদের এক দিনে বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে।
অবশ্য ছেলে উথরাজানের এখনই বিয়ের তাড়া নেই। রেমা দেবী বলেন, কিছুদিন বিদেশে পেশাগত কাজ শেখার জন্য উথরাজান আগ্রহী।
চার বোনের একজন উথারা ভারতীয় সংবাদপত্রকে সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা ছোট থাকতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম একই দিনে বিয়ে করার। অবশ্য এর সম্ভবনার বিষয়ে আমাদের সন্দেহ ছিল।
তিনি বলেন, আমরা একে অন্যের অভাব অনুভব করবো। কিন্তু আমাদের মা ও ভাইয়ের অনুপস্থিতি আরও বেশি অনুভব করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এবি