ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

মোদির দেশের মুক্তমত

ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী এক নতুন যুগের ভোরে ‍‍| রাসবিহারী দত্ত

মুক্তবিশ্লেষণ/মুক্তমত | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮০৮ ঘণ্টা, জুন ৫, ২০১৫
ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী এক নতুন যুগের ভোরে ‍‍| রাসবিহারী দত্ত

আগামী ৬ জুন বাংলাদেশ সফরে আসছেন প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দু’দিনের এ সফর দুই বন্ধুদেশের মধ্যকার যোগাযোগ, বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদারে তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সফর নিয়ে কী ভাবছেন মোদির দেশের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ। বাংলানিউজের বিশেষ আয়োজনে থাকছে তাদের মতামত।
 
গত জুনে আমি রাজশাহী থেকে ট্রেনে ফিরছিলাম। দেখেছিলাম কোথাও কোথাও ট্রেনলাইন আগাছায় ছেয়ে গেছে। সহযাত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় জেনেছিলাম রেল যোগাযোগের যে বিপুল আয়োজন তৈরি হয়েছিলো এক সময়, তা ১৯৬৫ সালের পর থেকে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। পাতা রেললাইন পাতাই আছে, চাকা গড়ায়নি। ভাবছিলাম আর ভাবতে ভাবতে কষ্টে বুক ভেঙে যাচ্ছিল।

আসন্ন ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী চুক্তি বুকের থেকে পাষাণ নামিয়ে আনতে জোরকদমে পা বাড়াচ্ছে। ২০০৯-এ শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর দিল্লি-ঢাকা যোগাযোগের একটা তোড়ফোঁড় প্রচেষ্টা শুরু হয়। তা গজকচ্ছপ গতি থেকে আজ ফের খরগোশ দৌড়ের গতি সঞ্চার করেছে।

আগামী ৬ জুন ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পা রাখবেন। সঙ্গে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। দীর্ঘ দিনের অবহেলিত ছিটমহল বিনিময় চুক্তির পাশাপাশি বাণিজ্য সম্পর্ক, পরিকাঠামো বিকাশ ও যোগাযোগ বাড়ানোকে পাখির চোখ করা হয়েছে।

কলকাতা-ঢাকা-আগরতলা, ঢাকা-শিলং-গৌহাটি সড়ক যোগাযোগ পরিষেবার পাশাপাশি রেল ও জলপথ যোগাযোগ বাড়ানোর রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। ভারত বাংলাদেশের মধ্যে ট্রেন পরিষেবা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রয়োজনে রেললাইন পাতা রক্ষণাবেক্ষণ ও বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাতে আগাছায় ভরে যাওয়া রেলপথ গুলোকে নতুন করে চালু করা যায়।

এই রেল লাইন চালু হলে দক্ষিণ আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা ও মিজোরামের সঙ্গে, বিশেষ করে আগরতলা-আখাউড়া ১৫ কিমি নতুন রেললাইন নির্মাণ ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ উন্নত হবে। যাত্রী পরিষেবায় জোয়ার আনবে।

স্বাধীনতার পূর্বে উত্তরবঙ্গ থেকে বাংলাদেশ হয়ে কলকাতা পর্যন্ত একটি জনপ্রিয় রেল যোগাযোগ ছিলো। তাকে যেমন পুনরুদ্ধার করা হবে তেমনি কোচবিহার ও শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের নীলফামারী, ঈশ্বরদী হয়ে কলকাতা রেল পরিষেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

পেট্রাপোল সীমান্তে এতদিন কাস্টমসের চেকপোস্ট ছিলো। এবার থেকে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক ঘাটতি দীর্ঘদিনের আলোচনার বিষয়। যতটা ভারত রপ্তানি করে বাংলাদেশের রপ্তানি সেই তুলনায় কম। এই ঘাটতি মেটাতে উভয় দেশই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে দু’দেশের মধ্যে আশ্বাসের সম্বন্ধ স্থাপন হয়েছে। এই আস্থার উন্নতি উভয় দেশের নেতৃত্বে এক ইতিবাচক দিক। ঢাকা সফরে স্থল সীমান্ত চুক্তি সর্বাধিক গুরুত্ব নিয়ে হাজির হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার জঙ্গি তৎপরতা রুখতে যে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে তাতে সন্তুষ্ট নয়া দিল্লি।

এখন ছিটমহলজুড়ে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস। আনন্দের বন্যা বইছে উভয় পাড়ে। এর মূলে এই পারস্পরিক মৈত্রী সম্পর্কে নতুন যুগের সূচনা। পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ অচিরেই যুগান্তকারী ভূমিকা রাখতে সাহায্য করবে। তিস্তা নিয়ে বিলম্বিত পদক্ষেপ কি খুব দূরে থাকতে পারে?

বাংলাদেশ সময়: ০৮০৭ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০১৫
এএ/

** মোদি-মমতার যৌথ সফর | অরুণ চক্রবর্তী
** মোদির বাংলাদেশ সফরে ভারতীয় হিসেবে আশা ‍| অভীক দত্ত
** মোদির বাংলাদেশ সফর: কিছু ভাবনা | পরিচয় পাত্র
** মোদির বাংলাদেশ সফর হোক বিশ্বের দৃষ্টান্ত | নৃপেন চক্রবর্তী
** সফর যেন আমাদের না বদলায় | সরোজ দরবার
** মোদির বাংলাদেশ সফরে ভারতীয় হিসেবে আশা ‍| অভীক দত্ত
** মোদির বাংলাদেশ সফর: কিছু ভাবনা | পরিচয় পাত্র
** অনেক কিছুই পাওয়ার আশা ‍| ড. অমিতাভ চক্রবর্তী

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।