কিশোরগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। কিন্তু তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো তিনি ছিলেন বাম রাজনীতিবিদ।
ঊনসত্তুরে পাকিস্তানের স্বৈরাচারী আইয়ূব শাসন বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন সে আমলে ছাত্র ইউনিয়ন মেনন গ্রুপের মহকুমা শাখার সভাপতি।
শৈশবে সত্তর ও আশির দশকে তার নেতৃত্বের নানা দিক আমরা চোখের সামনে দেখেছি। প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তার ছিল সুস্পষ্ট অবদান। স্থানীয় সুধী সমাজ ও নাগরিক আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সামনের কাতারের।
জীবনের শেষ দিকে তিনি খানিক হতাশ ও নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করতেন। সব কিছু থেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন নিজেকে। কখনও দেখা হলে আমাদের সঙ্গে নানা প্রসঙ্গে সরব হতেন।
পুরানো বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করতেন। তার একটি বিরল গুণ ছিল আতিথেয়তা। সাধ্য মতো মানুষকে আপ্যায়ন করতেন। মরু ভাই উপস্থিত থাকতে অন্য কারও পক্ষে চা, নাস্তার বিল পরিশোধ করা ছিল অসম্ভব!
প্রায় পনের দিন বাইরে অবস্থান করে দেশে ফেরার আগের দিন তার মৃত্যু সংবাদ শুনলাম। আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শাহ আজিজুল হক জানান, গত শনিবার দিনগত রাত ২টা ১০মিনিটে কিশোরগঞ্জ শহরের উকিলপাড়া নীলগঞ্জ রোডের বাসায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মরু ভাই।
মৃত্যুকালে স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী এবং আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন তিনি।
প্রিয় মরু ভাইয়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছে শহরের নানা দল ও মতের মানুষ । রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বাদ আসর শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজার নামাজে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেন।
এরপর শোলাকিয়া জান্নাত গোরস্তানে মরু ভাইকে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়। তার মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জের একজন জনপ্রিয় প্রবীণ নাগরিকের তারুণ্যময় জীবনের অবসান হলো।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০১৭
এমপি/এমএ