রাতারাতি পাল্টেছে সে ধারণা। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত কিশোর শাহীন এলোমেলো করে দিয়েছে সব হিসাব।
থাক। লজ্জা পেতে হবে না। আর একটু গভীরে যাই। এই শাহীনের কাছ থেকে যখন তার একমাত্র সম্বল ভ্যান কেড়ে নেওয়া হয়, সে লজ্জা তো পাবেন? এবারও আপনার তেমন একটা কষ্ট হচ্ছে না, বলুন? ভেবে নিয়েছেন, কেউ না কেউ ঠিকই কিনে দেবে। আমার লজ্জা পাবার কী আছে?
ধরে নিলাম নেই। এই যে ভ্যানটা কেড়ে নিতে গিয়ে দুষ্কৃতিকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত হলো শাহীন, এ লজ্জাও কি আমরা পাবো না? এবার নিশ্চয়ই একটু একটু লজ্জা হচ্ছে। আমার হচ্ছে না। গর্ব হচ্ছে। শাহীনের রক্ত খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশার ‘গর্ব’ আর বিবেকহীন চোরদের দীনতাকেই সামনে এনেছে।
ওদেরকে ধন্যবাদ। শাহীনকে এতো ছোট বয়সে জীবনের চূড়ান্ত শিক্ষাটা দিয়ে গেছে। এই শাহীন আর যাই পারুক, জীবনে মানুষকে বিশ্বাস করার সাহস দেখাতে পারবে না।
শাহীনের রক্ত কিন্তু আমাদের মতো গরম নয়। সে রক্ত ফেসবুকে হম্বিতম্বি করে টগবগিয়ে ফুটতে জানে না। শাহীনের রক্তটা শীতল। শরীরে শান্তভাবে বয়ে চলে সংগ্রাম করতে জানে। ওর ওই রক্তে মিশে আছে সব হারানোর চোখের জল!
লেখক
সিনিয়র সহকারী সচিব, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ৩০, ২০১৯
এইচএ/