ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

এত্তো উজান উজাইছো ক্যা, কইতে পারো!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৮, ২০২০
এত্তো উজান উজাইছো ক্যা, কইতে পারো!

সাহিত্য বোদ্ধারা দু’ভাবেই বলেছেন কথাটি- ‘সকলে কবি নয়, কেউ কেউ কবি’। আবার অন্যত্র বলেছেন, সকলে কমবেশি কবি হয়ে ওঠেন বিশেষ পরিস্থিতিতে। সত্যি কথা বলতে কী ভাই; আমি কবি নই। তবে মাঝেমধ্যে কবি হতে বড্ড সখ হয়। দু’ কলম লিখি, কাগজ ছিঁড়ে ছুড়ে ফেলে দিই বাস্কেটে। আর ভাবি; এটা কোনো লেখার মতন কিছু হলো কী! কখনো-সখনো পুরাতন কিছু লেখা- নিজেই পাঠক... পাঠ করি অবসরে। অবাক হই, আরে এমন করে আমি লিখলাম কখন- কীভাবে? যাই হোক, আমি যে কতোবড় মূর্খভাবিক তা আপনাদের একদিন শোনাবো, কথা দিলাম।

আমি মূলত একজন নকলবাজ মানুষ। দেখি, লিখি, তা- কিছু হোক বা না হোক।

কবিরা না-কি স্বপ্ন দেখেন ঘুমিয়ে- জাগরণের ভেতরে। ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখার বিষয়টি সকলে বোঝেন। কিন্তু জেগে কেমন করে, কীভাবে সেটা সম্ভব। ভাবতে ভাবতে আমার চুল পরার উপক্রম। মোবাইল হাতে বদঅভ্যেসে টিপাটিপি করছি। নানা মানুষের মনের কথা, লেখা পড়ছি। মাঝেমধ্যে ইউটিউবে ঢুকছি। হঠাৎ, একটি যন্ত্র চোখে পড়লো। দেখতে পেলাম ওটা অনেকটা; ধান ভাঙানো হলারের মতো। ওতে লোহা, বড় বড় প্লাস্টিকের সামগ্রী, সাইকেল- গাড়ি যাই ফেলছে ভেঙে চুরমার। গুঁড়ো গুঁড়ো। বাহ্..... , এইবার ভাবনার আকাশে মনপাখি ডানা মেলে উড়াল দিয়েছে আমার। সূত্র ধরে, বিশ্ব মোড়লদের মোড়লপনার দেশগুলোতে ‘করোনা’ ভাইরাসের করালগ্রাস এবং স্থবিরতার কথা মনে পড়ে গেলো। অর্থনীতি, জীবনমান মুহূর্তে মুখ থুবড়ে পড়েছে। আহ্ - হা’- রে... যদি সমস্ত বিশ্ব হতে আজই ‘করোনা’ ভাইরাসের রেশ একেবারে বিলুপ্ত হয়ে যেত! এবং তা- হওয়া মাত্রই সকলে একমত হয়ে, যতো অস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম এমন করে যন্ত্র দিয়ে পিষে নিঃশেষ করার সিদ্ধান্ত নিতো! তাহলে, কতোইনা ভালো হতো। ফিরে আসতো- আগের দিনের (প্রয়োজনবোধে) রাজায় রাজায় তলোয়ারের যুদ্ধ। প্রজারা নিরাপদ তথা দর্শক।

আমি জানি, সে আশা গুড়েবালি। ষড়রিপুর খেলা চলে অবিরাম মানব অন্তরে। তাই জেগে দেখা স্বপ্ন আমার স্বপ্নই রয়ে যাবে।

সুপ্রিয় পাঠক, পৃথিবীর ওপরে আমরা যে অবিচার-অত্যাচার করেছি, এ তারই কর্মফল ভোগ করছি। কথায় আছে, ‘পাপী মরে দশ ঘর নিয়ে’। আমরা নিজেদের যতোটাই মহারতি মনে করি না কেন, আসলে তা অহংকার ছাড়া কিছু নয়। অহংকারের পতন নিশ্চিত। প্রতিদিন, প্রতিক্ষণ উৎকন্ঠা, উদ্বিগ্ন মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে এখনও আমরা শুধরাইলাম না। আফসোস........... আফসোস! রাজনীতি, ধর্ম নিয়ে মনগড়া মতাদর্শ ফলাচ্ছি নির্লজ্জ হয়ে। মুখে লাগাম টেনে ধরছি না। সৎ ও সততার চিহ্ন নেই।

নিশ্চয় খেয়াল করেছেন, শিরোনাম- বরিশাল অঞ্চলের আঞ্চলিক ভাষায় দিয়েছি। উজাইছো মানে, বেড়ে গেছো বা মাত্রাতিরিক্ত বাড়াবাড়ি এমন কিছু হবে বোধহয়! টিকটকে এক মহিলা ভিডিও করে ছেড়েছেন। দেখেছি বলে ওটাকেই জুড়ে এনে লেখাতে দিলাম। বলা হচ্ছে, ঘরে থাকো। ঘরে থাকছি না। সরকারের একার পক্ষে কতটা সম্ভব, আমরা সচেতন না হলে! আবার দিন এনে দিন খাওয়া মানুষের পক্ষে একনাগাড়ে পেটে ক্ষুধা নিয়ে চলা অসম্ভব। বিত্তবানরা তেমন এগিয়ে এসেছেন- নজরে পড়ছে না। ব্যতিক্রমী কতিপয় সামাজিক সংগঠন ও যুবকদের বিবেকের জাগ্রত দায়বদ্ধতা দেখে বিস্মিত! আমি তাদের উদারতা সর্বপরি এমতাবস্থায় স্যালুট জানাই। আসছে আগামী দিনটি কিন্তু অন্ধকার। খুব অন্ধকার! যদি ‘করোনা’ আমাদের অল্পতেই ছেড়ে না দেয়। কী হবে- উপায় কী হবে? কেউ জানি না। বুঝি, দুনিয়ায় হাশরের ময়দান শুরু হয়ে গেছে।

লেখালেখি মনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। মন অতিরিক্ত খারাপ হয়ে গেলে- অচল। কে বাঁচি কে মরি, অজানা অতল সমুদ্র। কার ডাক কখন আসে, বোঝা মুশকিল! হে স্রষ্টা, তুমি আমাদের ক্ষমা করে পরিত্রাণ দাও। মানুষের বোধে বোধদয় দাও। আমরা আমাদের প্রতি সাংঘাতিক জুলুম করেছি।

লেখক: গল্পকার ও সাহিত্যিক

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০২০
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।