ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

আসুন মন ভালো রাখি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২০
আসুন মন ভালো রাখি

চারিদিকে কেমন যেন একটা দম বন্ধ অবস্থা। করোনা ভাইরাসের কারণে স্বাভাবিক অনেক কিছুই বন্ধ হয়ে গেছে। সবার মনের মধ্যে একটা অজানা ভয় কাজ করছে। রাজা, বাদশাহ, প্রধানমন্ত্রী, রাজপুত্র, মন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ কেউই বাদ পড়েননি। কিন্তু এত দুশ্চিন্তা করে লাভ কী? তার চেয়ে চলুন, মনটা ভালো রাখি।

পৃথিবীতে করোনা এসেছে মাত্র ৫ মাস হলো। এর আগে কি মানুষ মারা যেত না? কবরস্থান কিংবা শ্মশানগুলো কি বেকার পড়ে থাকতো? হাসপাতালগুলো কি বন্ধ ছিল? রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটতো না? তাহলে এত ভয় কিসের?

আমরা তখন সেসব বিষয় নিয়ে তেমন একটা ভাবতাম না।

যে কোনো সময় যে মৃত্যু হতে পারে, এই ভাবনাটা আসলে আমাদের মনের মধ্যে কাজ করে না।

করোনা আপনার আমার জন্য হয়তো দুশ্চিন্তা ডেকে এনেছে। কিন্তু সেই দেশগুলোর মানুষের কথা কি ভেবেছেন, যারা প্রতিনিয়ত অন্য শক্তিধর দেশগুলোর নৃশংস হামলার শিকার হতো। দিনের পর দিন ঘরের অন্ধকারে লুকিয়ে থাকতো কখন রকেট, বোমা, মিসাইল হামলা হবে সেই ভয়ে; কিছুই জানত না কখন কোন প্রিয়জন কোন হামলায় মারা যাবে; নিজের দেশ ছেড়ে অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার যন্ত্রণা; সাজানো বাড়িঘর মুহূর্তের মধ্যে ছাই হয়ে যাওয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। অর্থনীতি নিয়ে তাদের কোনো ভাবনা নেই। যুদ্ধের হাত থেকে কিভাবে বেঁচে থাকবে সেটাই সেই সাধারণ মানুষগুলোর একমাত্র ভাবনা।

সব যুদ্ধ, হামলা এখন বন্ধ। নিজেকে কিভাবে করোনা মুক্ত রাখা যায়, সবাই সেটা নিয়ে ব্যস্ত।  

করোনাকালের এই সঙ্কট কেটে যাবে ইনশাল্লাহ। কোনো বিপদ চিরস্থায়ী থাকে না। কিন্তু সেই সময়ও যেন বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো এখনকার মতো প্রাণঘাতী রোগের ব্যাপারে সোচ্চার থাকে, সর্বোচ্চ বিনিয়োগ যেন থাকে জনস্বাস্থ্য এবং ওষুধ গবেষণার ওপর।

এখন বায়ু দূষণ, শব্দ দূষণ প্রায় নেই বললেই চলে। মানুষ ছাড়াও যে পৃথিবীতে আরও প্রাণী আছে আমরা কিন্তু ভুলেই গিয়েছিলাম। প্রকৃতি তার বৈচিত্র্য ফিরে পাচ্ছে। শহরের অনেক মানুষের এখন পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে ঘুম ভাঙে, এটাও কম কিসের? জীবনটাকে উপভোগ করতে অনেক কিছু লাগে না।

দুশ্চিন্তা করে কোনো ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। মনটা ভালো রাখুন। মন ভালো রাখার অনেক উপায় আছে, সেগুলো মেনে চলুন। যুদ্ধের ময়দানেও কিন্তু অনেক সৈন্য হারমোনিকা বাজায়।

রাস্তা পার হওয়ার সময় নিশ্চয়ই আমরা চোখ বন্ধ করে থাকি না। দেখেশুনেই পার হতে হয় নতুবা দুর্ঘটনা ঘটবেই। এখনকার অবস্থা সেরকম ভেবে নিন। নিরাপদ দূরত্ব রেখে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করা দরকার। সঙ্গে কিছু প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা, যেগুলো মোটামুটিভাবে আমরা সবাই জানি। এইতো? অসুস্থতা, মৃত্যু নিয়ে এত দুশ্চিন্তার কিছু নাই। ভাগ্যের ওপর বিশ্বাস রাখুন। যার মৃত্যু আল্লাহ যেভাবে লিখে রেখেছেন, সেটা সেভাবেই ঘটবে।

আসুন, সচেতন থেকে, দুশ্চিন্তা দূরে রেখে, মন ভালো রাখি। ধরে নিন, অনেক কিছুই আপনার আমার হাতে নেই। তারপরও চলতে হবে।

লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।