ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তমত

ক্যাম্পাসে ফিরতে চায় ইডিইউর শিক্ষার্থীরা

তানভীর পিয়াল | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৫ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২১
ক্যাম্পাসে ফিরতে চায় ইডিইউর শিক্ষার্থীরা ইডিইউ ক্যাম্পাস।

এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়- সকল পর্যায়েই শিক্ষার্থীদের মাঝে অসহনীয়তা কাজ করছে এ নিয়ে।

ব্যতিক্রম নয় ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিও (ইডিইউ)। শিক্ষার্থীরা মুখিয়ে আছেন ক্যাম্পাসে ফিরে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি সিদ্ধান্তে ক্যাম্পাস বন্ধ গত বছরের ১৮ মার্চ হতে। সেদিন থেকে রুটিন অনুসারে প্রতিটি ক্লাসই অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে নিয়েছে ইডিইউ। করোনার কারণে একটি ক্লাসও বাদ পড়েনি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এ নিয়ে ইডিইউর শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে রয়েছে স্বস্তি। অনাকাঙ্ক্ষিত বাধায় শিক্ষাজীবন ব্যাহত হয়নি তাদের। কিন্তু ক্যাম্পাস জীবনের আনন্দঘন দিনগুলোর স্মৃতি তাদের মনকে ব্যাকুল করে তোলে।

ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিষেবা প্রদান চলমান রাখতে ইডিইউর অফিস খোলা। ভর্তি ও ফি প্রদান, ইঞ্জিরিয়ারিং ল্যাব ব্যবহার, কিংবা শিক্ষকদের সাথে দেখা করা- এমন নানা প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ মাঝে মাঝেই আসেন ক্যাম্পাসে। এ সময় তাদের সঙ্গে কথা হলে ক্যাম্পাসে ফেরার ইচ্ছে প্রকাশ করেন তারা।

কিছুদিন আগেই সামার ২০২১ সেমিস্টারের অ্যাডভাইজিং করতে ক্যাম্পাসে এসেছিলেন স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী আকাশ বড়ুয়া। তিনি বলেন, ক্লাসের ফাঁকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, ক্লাস শেষ হতেই ক্যান্টিনে অন্য বন্ধুদের কাছে ছুটে যাওয়া, গিটার নিয়ে গানের সুরে মেতে ওঠা, কোরাস গাওয়া, স্যারদের সঙ্গে জ্ঞানগর্ভ আড্ডা- এসবই তো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন। করোনাকালের ছুটিতে এসব হারিয়ে গিয়েছে। এখন তাই সুযোগ পেলেই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ক্যাম্পাসে চলে আসছি।

ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার পরও দলবেঁধে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে আসা দেখে খুব সহজেই বুঝে নেওয়া যায়, সকলের মাঝেই কাজ করছে ক্যাম্পাসে ফেরার তাড়না। সবকিছু আবার স্বাভাবিক সময়ের মতো হয়ে যাক, করোনাপূর্ব ক্যাম্পাসের মতোই, এই চাওয়াই শিক্ষার্থীদের।

অনলাইনে অ্যাডভাইজিং করার সুযোগ থাকলেও শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে ক্যাম্পাসেই আসছেন। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী শায়ন রায় চৌধুরী বলেন, অনলাইনে ক্যাম্পাসের মতোই সব সুযোগ সুবিধা ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে। এমনকি অনলাইন ক্লাসগুলোর মানও সরাসরি ক্লাসের মতোই। কিন্তু তাও ক্যাম্পাসের কোনো পরিপূরক হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় দাঁড়িয়ে আড্ডা দেওয়ার আনন্দ আর কিছুতে নেই।

ইডিইউর স্কুল অব বিজনেসের সহযোগী ডিন ড. মু. রকিবুল কবির বলেন, অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম চলমান থাকলেও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্যাম্পাসে ফেরার এক ধরনের আকুতি কাজ করে। ক্লাসে বসে লেকচার শোনা, ল্যাব ও লাইব্রেরির কোনো বিকল্প হয় না। আর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা তো আছেই। প্রায়ই নানান কাজের ছুতোয় বা ফ্যাকাল্টি মেম্বারদের সঙ্গে দেখা করতে কোনো না কোনো শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসে। তখন তারা ক্যাম্পাসে ফেরার ইচ্ছের কথা আমাদের জানায়। দীর্ঘদিন ঘরে বসে থেকে তারা হাঁপিয়ে উঠেছে।

ইডিইউর প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসম্মত পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথাও ভাবতে হবে। ক্যাম্পাসের নির্মল পরিবেশ, স্বাভাবিক জীবনযাপন তাদের সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্লাস করার ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনা ও কৌশল গ্রহণ করে ক্যাম্পাস খুলে দেওয়ার কথা সরকার বিবেচনা করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২১
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।