গত মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ভোরে আত্মহননের পথ বেছে নেন গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্ঘ্য বিশ্বাস। আত্মহননের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সুইসাইড নোট লিখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও দেশের সামগ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি রাখ-ক্ষোভ-অভিমান প্রকাশ করে যান তিনি।
অর্ঘ্য বিশ্বাসের আত্মহত্যার প্রেক্ষিতে রোববার (১৯ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদী মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন। বিক্ষোভ মিছিলটি মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এরপর সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে কলাভবনের সামনে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক ইসরাত জাহান, দপ্তর সম্পাদক এম এইচ রিয়াদ, কেন্দ্রীয় সদস্য জাহিদুল আলম আল জাহিদ। সমাবেশ পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ঢাবি শাখার সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির।
সভাপতি গোলাম মোস্তফা বলেন, শিক্ষার গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাব ও আরোপিত নিয়ম-নীতির রোষানলে হাজার হাজার অর্ঘ্য বিশ্বাস ভেতরে ভেতরে ডুকরে মরছে। অর্ঘ্যের আত্মহত্যার ঘটনা প্রচলিত কর্তৃত্ববাদী, দমনমূলক শিক্ষাব্যবস্থার নিপীড়নের চেহারাকেই উন্মোচিত করেছে কেবল।
শিক্ষার্থী অর্ঘ্য বিশ্বাসের আত্মহত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বলে উল্লেখ করে গোলাম মোস্তফা বলেন, মৃত্যর আগে অর্ঘ্য বিশ্বাস বর্তমান সমাজের অন্যায়-অবিচার, জাতিগত নিপীড়ন, রাষ্ট্রের অর্থ লুটপাট বিষয়গুলো নিয়ে তার ক্ষোভের কথা লিখেছেন। অর্ঘ্যের মন্তব্য থেকে আমরা বুঝতে পারি তার এই আত্মহত্যার জন্য বর্তমান অগণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বৈরতান্ত্রিক প্রশাসনই পরোক্ষভাবে দায়ী।
শিক্ষাব্যবস্থা থেকে সব ধরনের স্বৈরতান্ত্রিকতা, কর্তৃত্ব, নিপীড়ন-দমননীতি ও অগণতান্ত্রিকতা উচ্ছেদ করতে আপামর ছাত্রসমাজের প্রতি আহ্বান জানান ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি।
অন্যান্য বক্তারা বলেন, পরীক্ষায় বসতে না দেবার জের ধরে অর্ঘ্য বিশ্বাসের আত্মহত্যার ঘটনায় আমরা ব্যথিত এবং চিন্তিত। তার সুইসাইড নোটের বক্তব্য অনুযায়ী, তিনি শিক্ষাব্যবস্থার বিদ্যমান অগণতান্ত্রিকতা ও প্রশাসনিক স্বৈরতান্ত্রিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। তার প্রতি বিভাগের শিক্ষকদের যে কটাক্ষ ও চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত ছিল সেটা সুইসাইড নোটে লিখেছেন। সুতরাং তার এই আত্মহত্যার দায় প্রশাসনকেই নিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০১৭
এমজেএফ