বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে বাজেটের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলনে ১৩ দফা প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পলিটব্যুরোর সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, ড. সুশান্ত দাস, মাহমুদুল হাসান মানিক, নুর আহমেদ বকুল, হাজেরা সুলতানা, কামরুল আহসান, আমিনুল ইসলাম গোলাপ, অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, জ্যোতি শংকর ঝন্টু, হাজি বশিরুল আলম, এনামুল হক এমরান, নজরুল ইসলাম হাক্কানী, নজরুল হক নীলু প্রমুখ।
রাশেদ খান মেনন বলেন, করোনা ভাইরাসের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অভিঘাত কেবল এ বছরই নয়, আগামী দু’এক বছর বহাল থাকবে। জীবনকে রক্ষা করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে এগিয়ে নিতে সেই ধরনের পরিকল্পনা নিতে হবে।
ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি ১৩ দফা প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো-
(১) কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ বাড়িয়ে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্য খাতের সুনির্দিষ্ট ব্যয়ের জন্য রাখা। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী ও লকডাউন এলাকায় আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিতসহ জনগণকে সহায়তা প্রদানের জন্য আলাদা বরাদ্দ দেওয়া।
(২) সার্বজনীন স্বাস্থ্যে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করা ও তার বাস্তবায়ন।
(৩) করোনাকালে বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানসমূহ সরকারি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সবার জন্য চিকিৎসা সহজলভ্য করা।
(৪) গার্মেন্টসসহ শিল্পখাতে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ, ব্যাংক কর্মচারীসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কর্তন নিষিদ্ধ করা, করোনা ঝুঁকিতে থাকা শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা মালিক ও শ্রমিকদের বহন করা এবং শ্রমিক এলাকায় পরীক্ষা যন্ত্র স্থাপন করা।
(৫) শিল্পক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা এবং জুট ও টেক্সটাইল শিল্পে শ্রমিকদের পেনশন, গ্রাচ্যুইটিসহ সকল বকেয়া পরিশোধের বরাদ্দ বাজেটে রাখতে হবে।
(৬) কৃষি উদ্বৃত্ত ফসল সরকার কর্তৃক কিনে নেওয়া এবং তা গুদামজাত ও সংরক্ষণের জন্য পূর্ব প্রতিশ্রুত প্যাডি সাইলো নির্মাণ করা ও সমবায়ের ভিত্তিতে তার পরিচালনা করা, কৃষি যন্ত্রপাতি সমবায়ের ভিত্তিতে প্রদান করা।
(৭) আগামী ছয় মাসের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের পরিবার প্রতি বিনামূল্যে ১০ কেজি করে চালসহ খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের প্রতি মাসে ৫০০০ টাকা সহায়তা প্রদান।
(৮) সামাজিক নিরাপত্তাবলয় বৃদ্ধি করতে হবে। ৫ কোটি মানুষ বা ১.২৫ কোটি খানাকে রেশনের আওতায় আনা।
(৯) ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও নৌ-সড়ক পরিবহন কর্মী এবং সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীদের ঝুঁকিভাতা দেওয়া।
(১০) বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য বিশেষ ঋণ তহবিল ঘোষণা।
(১১) শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা ও শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসের জন্য ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের জন্য বিশেষ ঋণ তহবিল ঘোষণা করা, মোবাইল সারচার্জ ও ইন্টারনেট সারচার্জ প্রত্যাহার করা।
(১২) রাজস্ব আয়ের জন্য সম্পদ কর, অর্থ পাচারকারীদের মানি লন্ডারিং আইনে পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত ও তা ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।
(১৩) পূর্ব প্রতিশ্রুত ব্যাংক সংস্কার কমিশন গঠন ও ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম চালু করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪০ ঘণ্টা, জুন ২৫, ২০২০
আরকেআর/এইচএডি/