এমারসন
মন্ট্যানিয়ের বিশাল পাণ্ডুলিপি বন্ধ করে
দীর্ঘদেহী নিউ ইংল্যান্ড নিবাসী নেমে পড়ল
বিস্তীর্ণ প্রান্তর জুড়ে ঘনীভূত সন্ধ্যার গহ্বরে
নিবিড় পাঠের মতোই আনন্দদায়ী এ ভ্রমণ
অস্তায়মান সূর্যরেখার প্রান্ত ধরে সে এগোলো
যেখানে স্বর্ণাভ দিগন্তরেখা হয়েছে লীন
ক্রমশ নিশীথে নিমজ্জমান প্রান্তরের বুক চিরে সে চলছিল তার আপন চলনেই
এ পথের গল্প যার রচনা তার স্মৃতিকে অনুসরণ করেই সে চলছিল
সে ভাবছিল: এইসব মোহন গ্রন্থ আমি পড়েছি
এবং লিখেছি অন্যকিছু যা বিস্মৃত
মলিন হবে না। আমি এমনই বোধিপ্রাপ্ত
যা নশ্বর মানুষকে প্রদান করা হয়েছে অভিজ্ঞান লাভে
সমগ্র ভুবন জানে মোর নাম
আমি ছিলাম না তাতে।
ক্যামডেন, ১৮৯২
কফির ঘ্রাণ এবং খবরের কাগজ
রোববার এবং তার সমূহ অবসাদ। সেই সকাল
এবং পত্রিকার ক্রোড়পত্রে, অহম জাগানিয়া-
রুপক পদাবলীর পসরা সাজানো
সৌভাগ্যবান কোন অনুজ কবির। বয়েসী মানুষটি
শুয়ে আছে তার অনাড়ম্বর ডেরার সফেদ বিছানায়,
একজন দীন মানুষের আবাস। ক্ষীনদৃষ্টি
মেলে অপলক তাকায় ঝাপসা আয়নায়
সে ভাবে, অতিক্রান্ত বিস্ময়ে: এই মানুষটি
আমি, এবং অবচেতনমনে তার হাত
আঙুল বোলায় অবিন্যস্ত দাড়ি আর তোবড়ানো মুখে
সমাপ্তি আসন্ন। নিজেকেই মৃদুস্বরে বলে-
আমিতো প্রায় মৃত, কিন্তু এখনও আমার কবিতা ধরে আছে
জীবন ও তার সমূহ বিস্ময়। একদা আমি ছিলাম ওয়াল্ট হুইটম্যান।
সহজ
উন্মোচিত হলো, বাগানপথের দোর
একান্ত অনুগত খোলা ডায়রির মতো
যা নিয়ত ভক্তিতে প্রশ্নাকুল
এবং আমার গহীনে অন্তর্দৃষ্টির
প্রয়োজন নেই সেসব মেরামত করবার
যা ইতোমধ্যেই অস্ত্বিত্বশীল, নিখুঁত, স্মৃতিময়।
আমি জ্ঞাত সেই লোকাচার এবং আত্মা সমন্ধে
এবং উৎপ্রেক্ষার প্রাকৃতভাষা
যা প্রতিটি মানবপ্রজন্ম বুনে যাচ্ছে নিরন্তর
আমার নিষ্প্রয়োজন কথামালার আশ্রয়
অন্যায্য সুবিধার আবদারও নয়
তারা বিলক্ষণ জানে কি আমায় করে আছে অধিকার
জানে আমার সমূহ দূর্বলতা
মোক্ষলাভের এই সুবর্ণ সময়
হয়তো স্বর্গের দ্বার অবারিত হবে আমাদের জন্য
স্তুতি কিংবা বিজয়ে নয়
কিন্তু সহজ আদরে করবেই গ্রহণ
অনিবার্য বাস্তবতার পরম্পরায়
ঠিক উপলখণ্ড কিংবা বৃক্ষের মতো।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
এসএনএস